চুয়াডাঙ্গায় কম্বল বিতরণ ফটোসেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:১৪
-১৭-65a78c4fca400.jpg)
রাস্তার পাশে বিক্রি হচ্ছে শীতের পোশাক। ছবি: চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গায় টানা ৩৯ দিন নিম্ন তাপমাত্রা আর এলোমেলো ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবন ওষ্ঠাগত। কর্মহীন মানুষের খাদ্য সহায়তায় কেউ নেই। তারা কিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছে সে খোঁজ প্রশাসনসহ নিচ্ছে না কেউ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও কম্বল বিতরণ অব্যাহত থাকলেও তা এ জেলার জন্য অপ্রতুল।
প্রশাসনের তালিকায় দিনমজুর এবং ছিন্নমূল মানুষ ঠাই পাচ্ছে না। গতানুগতিকভাবে আগের মতই এ জেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত মানুষের মধ্যে বিতরণ কাজ সীমাবদ্ধ রাখার হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের মধ্যে কিছু নিম্ন মানের কম্বল বিতরণ করে সেটা ফটোসেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। শীতার্ত খেটে খাওয়া মানুষ এ জেলায় উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছে। আয় না থাকায় খেটে খাওয়া দিনমজুররা রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া শীত নিবারণের পোশাক কিনতে গিয়েও ফিরে যাচ্ছে। শীতে কাবু হলেও শীতের পোশাক কেনার ক্ষেত্রে তারা সামর্থ হারিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। এদিন সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গার আকাশে মেঘ জমবে এবং বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় আরো শীতের প্রকোপ আরো বাড়তে পারে।
শীতের কারণে দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে সে কারণে তাদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে প্রথম দফায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ১৭ হাজার ৬০০টি কম্বল পাওয়া যায়, ওগুলো আগেই উপজেলা ও পৌরসভা এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় সেখান থেকে কম্বল পাওয়া গেছে ৬ হাজার ৪০০টি, সেগুলো উপজেলা ও পৌরসভায় বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ১৫ কেজি ওজনের ৪০০টি প্যাকেট সম্বলিত শুকনো খাবার ৪০০ জনকে বিতরণ করা হয়েছে। তবে শীত আবহাওয়ায় শীতার্ত মানুষের সহায়তায় এর বেশি কোন কাজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চুয়াডাঙ্গায় প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড শীতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে খেটে ও ছিন্নমূল মানুষ। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসা জরুরি বলে মনে করে এ জেলার সাধারণ মানুষ। সারা দিন শীতে এ জেলায় স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। যা প্রত্যেক দিনই প্রভাব পড়ছে মানুষের ওপর।