রাজশাহীতে কে হবেন মহিলা এমপি, চলছে দৌড়ঝাঁপ

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:১৮

এমপি হতে মাঠে নেমেছেন নারীনেত্রীরা। ছবি- রাজশাহী প্রতিনিধি
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ভোট হবে ফেব্রুয়ারিতে। তাই সংরক্ষিত আসনের এমপি হতে মাঠে নেমেছেন রাজশাহীর অন্তত আট থেকে নয়জন নারীনেত্রী। কাকে টপকে কে হবেন এপি এ প্রতিযোগিতা চলছে সরকারদলীয় এসব নেত্রীদের মধ্যে।
একাদশ জাতীয় সংসদে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা। এমপি হয়ে গত পাঁচ বছর তিনি ঢাকামুখীই ছিলেন। পারিবারিক কারণে তিনি ঢাকাতে অবস্থান করেন। এ কারণে রাজশাহীতে অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি। তবে এবারও এমপি হতে চান মিতা। এ জন্য এরই মধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে আরও আছেন মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সালমা রেজা, সিনিয়র সহসভাপতি ইফফতাত আরা কামাল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার মিতা, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য, মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মোহনপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রোকসানা মেহবুব চপলা এবং মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পূর্ণিমা ভট্টাচার্য। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে এবার আলোচনার শীর্ষে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের এক নম্বর সহ-সভাপতি শাহিন আকতার রেনী।
চপলা রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলীয় ফর্মও তুলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাননি। এর আগের বার নারী আসনে এমপি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। মর্জিনা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় মহিলা সংস্থার রাজশাহী শাখার চেয়ারম্যান। দলীয় সভাপতি হলেও রাজনীতির মাঠে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় সালমা রেজা। নাসরিন আকতার মিতা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএর চেয়ারম্যান ও সাবেক সংরক্ষিত এমপি বেগম আকতার জাহানের মেয়ে। মেয়েকে এমপি বানাতে আকতার জাহানও দলের বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির করছেন বলে জানা গেছে।
রোখসানা মেহবুব চপলা বলেন, আমার বাবা মো. আব্দুল মজিদ। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। তিনি মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ৮০ দশকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি জাতীয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শ্রী রাখাল চন্দ্র দাস স্যারের সাথে রাজনীতি করেছেন। আমার ভাই মেহেবুব হাসান রাসেল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক। আমার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে। এর আগেও নারী আসনের মনোনয়ন তুলেছিলাম। রাজশাহী-৩ আসনে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন তুলেছিলাম। কিন্তু যাকে দল মনোনয়ন দিয়েছে আমি তার পক্ষেই কাজ করেছি। বিশেষ করে নারীদের উন্নয়নে আমি কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই আশা করছি দলীয় সভানেত্রী ও শেখ হাসিনা এবার আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
অন্যদিকে শাহিন আকতার রেনী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সহধর্মিণী। ২০০৮ সালে লিটন প্রথম মেয়র নির্বাচিত হলে প্রকাশ্য রাজনীতিতে মাঠে নামেন রেনী। মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডেই রয়েছে তার নিরবচ্ছিন্ন পদচারণা। রাজনীতির বাইরেও রেনীর পরিচিতি নারীনেত্রী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক হিসেবে। নানা জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে জড়িত। বিশেষ করে অটিজম শিশুদের সেবায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। ফলে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। পারিবারিক ঐতিহ্যকে ধারণ করে রেনী রাজশাহীতে অর্জন করেছেন নিজস্ব পরিচিতি। উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান তৈরিতে অনন্য ভূমিকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। সারাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম ঐক্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি তিনি। রাজশাহীর ওয়াসার ভাইস চেয়ারম্যানও তিনি। নানা ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে জড়িত থাকার কারণে বিশেষ করে নারীদের মাঝে জনপ্রিয় মুখ রেনী।
নিজের প্রার্থিতার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি শাহিন আকতার রেনী। তবে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, কেবল শীর্ষমহল থেকে ‘সবুজ সংকেত’ পেলেই মনোনয়ন তুলবেন তিনি। এর বাইরে রেনী কোনো ধরনের চেষ্টা-তদবির করছেন না।