নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের নৈগাঁও গ্রামে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে খাস জমি চিহ্নিত করার সময় গ্রামবাসীর সাথে উপজেলা সার্ভেয়ারের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, হাতাহাতি ও হামলার ভিডিও ধারণ করার সময় উপজেলা সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম আহত হন।

হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সার্ভেয়ার মো. হাদিউল ইসলাম বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় একটি মামলা করেন।

পরে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন, নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের নৈগাঁও গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুর রহিম (৬৮), আগিয়া ইউনিয়নের আন্দা গ্রামের আ. হামিদের ছেলে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক আবুল হাসিম (৪৫) ও একই গ্রামের ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক নিজাম উদ্দিন (৪৫)।

আরো জানা যায়, সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুদীপ্তা দেবী। আহত সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম চোখের নিচের ছাড়াও মাথায় আঘাতেরও অভিযোগ করেন। 

তবে এ বিষয়ে ডা. সুদীপ্তা দেবী মাথায় কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে জানান। বাম চোখের নিচে কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলামকে বারবার যোগাযোগ করে খোঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি নাজনীন আখতার জানান, একটি খাস হালটে ঘর উঠানোর অভিযোগে উপজেলা সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলামকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিনি মাঠপর্যায়ে গেলে তার ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় উপজেলা সার্ভেয়ার বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আটককৃতদের গতকাল শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার নৈগাঁও গ্রামের ইমাম হোসেন ও শাহীনের বাড়ির মাঝখান দিয়ে ১২-১৩ ফুটের একটি হালট রয়েছে। স্থানীয় নৈগাঁও গ্রামের ভূমিহীন ও বিধবা ছুলেমা খাতুন (৫৫) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে ইমাম হোসেন ও শাহীনের যাতায়াতের জন্য রাস্তা রেখে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। যখন সরকারের প্রয়োজন হবে তখন ছেড়ে দেওয়ার শর্তে দোকান ঘর নির্মাণ করতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম আল আমিনের কাছে আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া ও সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম হালটে উপস্থিত হয়ে মাপামাপি শুরু করে। স্থানীয় লোকজন জানতে চাইলে একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এসময় সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম তার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। স্থানীয়রা মোবাইল ছিনিয়ে নিতে চাইলে হাতাহাতির এক পর্যায়ে হাতের কনুই লেগে মুখে থাকা চশমার ফ্রেম দিয়ে কেটে যায়। তাৎক্ষণিক সার্ভেয়ার হাদিউল এসিল্যান্ডকে বিষয়টি অবগত করলে এসিল্যান্ড নাজনীন আখতার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।