মানিকগঞ্জে তথ্য সংগ্রহে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:১৫

কালিগঙ্গা নদীতে চলমান অবৈধ ড্রেজার। ছবি: মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের কালিগঙ্গা নদীতে চলমান অবৈধ ড্রেজারের সংবাদ সংগ্রহকালে ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি সুরেশ চন্দ্র রায় ড্রেজার ব্যবসায়ীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ঘিওর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নের আশাপুরের সড়কঘাটা এলাকার কালিগঙ্গা নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
শারীরিক নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক সুরেশ চন্দ্র রায় জানান, সিংজুরি ইউনিয়নের আশাপুর সড়কঘাটা ও মির্জাপুর এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে রতন মেম্বার ও সানোয়ার পীরের দুটো অবৈধ ড্রেজার দীর্ঘদিন চলমান রয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে চলমান ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও তথ্য সংগ্রহ করি। ফেরার পথে সিংজুরি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ও ড্রেজার ব্যবসায়ী রতন মিয়া আমার গতিরোধ করে বিশ হাজার টাকা দিতে চান এবং মোবাইলে ধারণকৃত ড্রেজারের ছবি, ভিডিও ও ডকুমেন্ট কেটে ফেলতে বলেন। আমি মেম্বারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে মেম্বার তার ভাই আলামিনকে আমার মোবাইল কেড়ে নিতে বলেন। এসময় আমি মোবাইল দিতে না চাইলে রতন মেম্বার, তার ভাই আলামিন ও ড্রেজারের শ্রমিক শাহআলম আমাকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকেন। তখন আমি এদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে এবং ড্রেজারের ডকুমেণ্ট রক্ষা করতে তামাক ক্ষেতের ভেতর দিয়ে দক্ষিণ দিকে দৌড় দিয়ে হাতের ডকুমেণ্ট সম্বলিত একটি মোবাইল তামাক ক্ষেতে ছুড়ে ফেলে দেই এবং উচ্চ স্বরে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকি। আমার চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা চলে যায়। পরবর্তীতে আমি পেঁচারকান্দা বাজারে এসে বিস্তারিত ঘটনা ঘিওর থানার অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাসকে অবহিত করি। ওসি থানা থেকে ফোর্স পাঠান। ফোর্সের সহায়তায় পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তামাক ক্ষেত থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে থানায় গিয়ে জিডি করি।
ন্যক্কারজনক এ ঘটনার পরও থেমে নেই রতন ও সানোয়ার পীরের ড্রেজার ব্যবসা। রতন মেম্বারসহ দোষীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি ও চিরতরে কালিগঙ্গা নদীতে ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান মিঠু জানান, রতন মেম্বার দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে অবৈধ ব্যবসা ও সাংবাদিকের গায়ে হাত তোলা শোভনীয় নয়। তিনি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস বলেন, একজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে যদি সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন-সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং শতভাগ অন্যায়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।