এমপির অনুষ্ঠানে ট্রেন পুড়ানো মামলার পলাতক আসামি

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২৫

ট্রেন পুড়ানো মামলার আসামি এমপিকে ফুল দিয়ে বরণ করছেন। ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মামলার পলাতক আসামিকে প্রকাশ্যে দেখা গেছে এমপি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে।
আজ শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে জামালপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ট্রেন পুড়ানো মামলার ৩ নম্বর আসামি শফিউর রহমান সফিকে সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে লায়ন্স ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে দেখা যায়।
এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি ক্রীড়া অনুষ্ঠানেও তিনি সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ পুড়ানো মামলার আসামি হয়েও এভাবে প্রকাশ্যে এমপির অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকায় জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অথচ পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ডিলিজেন্ট বিনামূল্য চোখের ছানি রোগী বাছাই ও অপারেশন এবং ফ্রি ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ঔষধ, কম্বল, সেলাই মেশিন ও হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউর রহমান সফি।
এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি কাচারীপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। সেখানেও এমপি প্রধান অতিথি ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে শফিউর রহমান এমপি আবুল কালাম আজাদকে ফুল দিয়ে বরণ এবং বক্তব্য প্রদান করেন।
দুটি অনুষ্ঠানেরই লাইভ এবং তথ্য ও ছবি নিজের ফেসবুক পেইজেও আপলোড করেন এমপি।
জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর রাত সোয়া ১টার দিকে সরিষাবাড়ী স্টেশনে ঢাকা থেকে তারাকান্দিগামী আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় ৪১ জন এজাহারভুক্তসহ অজ্ঞাত আরো ৩০-৪০ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। এ মামলার ৩ নম্বর আসামি সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সিংহজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউর রহমান। বর্তমানে তিনি পুলিশের ভাষায় পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামি প্রায়ই প্রকাশ্যে সরকারদলীয় এমপির সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ট্রেন পুড়ানো মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জামালপুর রেলওয়ে থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক তারা মিয়া জানান, মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। এজাহারনামীয় ৪১ জন আসামির মধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, এরমধ্যে ১১ জন জামিনে এসেছেন। তবে ৩ নম্বর আসামি শফিউর রহমানের জামিনসংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র হাতে পাইনি বিধায় তিনি পুলিশের কাছে পলাতক।
পলাতক আসামি প্রকাশ্যে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, এমনটা জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কল করলে শফিউর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।