Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

ফের কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত: নাফ নদীর পাড়ে বিস্ফোরণের শব্দ

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৮

ফের কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত: নাফ নদীর পাড়ে বিস্ফোরণের শব্দ

টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকা। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পূর্ব ও দক্ষিণাংশের নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যার প্রভাব এসেছে নাফ নদীর এপারেও।

আজ শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে সীমান্তের এপারও। এর কিছুক্ষণ পর থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। 

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আসছে এমন বিস্ফোরণের শব্দ। শাহপরীরদ্বীপের একাধিক বাসিন্দার সাথে আলাপ করে এমন বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম জানান, নাফনদীর পূর্ব ও দক্ষিণাংশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। যেসব স্থান থেকে গোলাগুলির আওয়াজ আসছে সেখানে রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নল বন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা অবস্থিত। এসব এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি নিরাপত্তাচৌকি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ওই চৌকি ঘিরেই চলছে এই সংঘর্ষ।

তিনি বলেন, গেল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশের প্রচুর গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়। তবে রাতভর কোনো ধরনের শব্দ শোনা যায়নি। শনিবার সকাল থেকে কিছুক্ষণ পরপর বিকট শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে এপারে। সেই সঙ্গে গোলাগুলির শব্দ কানে ভেসে আসে।

সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গতকাল রাত ১টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান তারা। মাঝেমধ্যে মাটি কাঁপানো শব্দও শুনেছেন। তবে সকালবেলা প্রায় এক ঘণ্টা ব্যাপক গোলাগুলিতে সীমান্তের এপারের মানুষের ঘুম ভেঙ্গেছে। শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে সকালে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। এর কিছুক্ষণ পর বিকট দুটি শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।

শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, মিয়ানমারে রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে সকালে দুটি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে।

শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে মিয়ানমার সীমান্ত শান্ত ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। এতে তারা ভীত হয়ে পড়েছেন।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের সাথে সেন্টমার্টিনের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। দূর থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। সকালে দুটি বিকট শব্দ পাওয়া গেলেও ৮টার পর থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছে টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। কারণ সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে গতকাল ভোর ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। গুলির আওয়াজের সাথে কয়েকটি স্থানে ধোঁয়া উড়তেও দেখা যায়।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎ টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ ও গোলাগুলি খবর পাওয়া যায়। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কের পাশাপাশি বিজিবির টহল আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এটি মিয়ানমারের সমস্যা। মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে চুক্তির মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে গেছেন আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য, কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ইমেগ্রেশন অফিসার। তারা অনেকটা প্রাণভয়ে সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিলেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫