গাইবান্ধায় স্ত্রীর সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে তালাক দেওয়ার অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৬

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী। ছবি: গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রায় ২৭ বছর আগে আনসার বাহিনীতে চাকুরির সুবাদে ফিরোজ আহমেদ ও মাহাফুজা আক্তারের পরিচয় হয়। এরপর পারিবারিকভাবে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে তাদের সংসারে আলো হয়ে আসে এক ছেলে ও এক মেয়ে। তবে শুরু থেকেই সন্তানদের বেড়ে ওঠা ও খোঁজ খবর নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ ছিল না ফিরোজ আহমেদের। সংসারেও মন ছিল না তার। নেশা ছিল শুধুই টাকার। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর বেতনও নিয়েছিলেন নিজের কবজায়। কৌশলে ব্যাংক থেকে স্ত্রীর নামে নেন মোটা অঙ্কের ঋণ। ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে রেখে দেন নিজের কাছে। তবে তখনো স্বামীর মূল অভিসন্ধি বুঝতে পারেননি মাহাফুজা আক্তার। এরপর বাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তি নিজের করে নিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চেক ডিজওনার মামলা দেন ফিরোজ আহমেদ। সর্বশেষ ২৭ বছরের ছলচাতুরীর সংসার শেষে চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারি পাঠিয়ে দেন তালাকনামা। এমনি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নায়ারনপুরের সুখনগর এলাকায়।
আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রেসক্লাব গাইবান্ধা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মাহাফুজা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বামীর প্রতারণার অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিকের কাছে।
তিনি বলেন, আমার স্বামী এত বড় প্রতারণা করবে আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি নাই। ২৭ বছরের সংসারে সমস্ত গ্লানি মুখ বুজে সহ্য করেছিলাম। কিন্তু আমার শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে তালাক জুটল আমার কপালে!
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, প্রায় দুই বছর আগে আমার স্বামী সন্তানের চিকিৎসা ও ঋণ পরিশোধের কথা বলে আমার কাছে দুটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে গত বছর জানুয়ারিতে তার ছোট ভাই রাশেদুল ইসলামকে দিয়ে প্রথমে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রাজ্জাক মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪ লাখ ৮০ হাজার চেক ডিজওনার মামলা দেন। এখানেই শেষ নয়, আমার নামে আনসার ভিডিপি ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ তুলে নেন। যা এখন আমি নিজেই পরিশোধ করে আসছি। আমার চাকুরি জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তৈরিকৃত বাড়ি ও সমস্ত সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাড়ি উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেন। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমাকে তালাক দিয়ে দেন।
বর্তমানে আমার স্বামী বান্দরবান জেলায় আনসার ব্যাটালিয়ানে কর্মরত। তিনি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করে আমাকে ও আমার সন্তানদের পথে বসিয়েছেন। সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব।
তিনি বলেন, এমন প্রতারণার বিষয়ে আমি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু সেই মামলার তেমন অগ্রগতি নেই। আমি আপনাদের মাধ্যমে এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি। ফিরোজ আহমেদ আঙ্গুরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।