Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

কামার শিল্পে ছন্দপতন

Icon

তাহজীবুল আনাম

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০৭

কামার শিল্পে ছন্দপতন

সারা দেশেই কামার কারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

প্রাচীনকাল থেকে লোহাকে কয়লার আগুনে পুড়িয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কামার সম্প্রদায়ের লোকেরা তৈরি করে আসছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেটি হারিয়ে যেতে বসেছে। লোহা শিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি, আধুনিক চাষাবাদ ও ক্রেতা স্বল্পতার কারণে কর্মকারদের কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। আয় রোজগার না থাকায় পেশা পরিবর্তন করছেন অনেকে। কর্মকারদের দাবি, সরকারি সাহায্য সহযোগিতা এবং ব্যাংক বা এনজিও থেকে সহজশর্তে ঋণ পাওয়া গেলে তারা এই পেশাকে কোনো রকমে টিকিয়ে রেখে জীবন যাপন করতে পারবেন। 

ক্ষুদ্রশিল্পের আওতায় থাকা কামারদের ক্ষুদ্র কারখানায় হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দ আর হাপর দিয়ে কয়লার আগুনকে উসকে তাতে লোহা গরম করে পিটিয়ে পিটিয়ে বিভিন্ন আকারের লোহার জিনিসপত্র তৈরি করে থাকে। আদি যুগ থেকে এগুলোর ব্যবহার বেশি থাকলেও কালের পরিবর্তনে লোকজন এখন এসব লোহার তৈরি পণ্য তেমন ব্যবহার করতে আগ্রহী নন। যার ফলে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

সারা দেশেই কামার কারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজার জেলা শহর ও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মাত্র ৫ বছর আগেও যেখানে ২ হাজারের অধিক কর্মকারের কারখানা ছিল; আজ সেখানে আছে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র। এ সব কারখানা থেকে তৈরিকৃত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেতেন। তাদের ব্যবসা ছিল জমজমাট। কিন্তু লৌহজাত শিল্পের সংকটের কারণে পেশাদার কর্মকাররা তাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন। আর যারা অন্য কোনো কাজ পারেন না কেবল তারাই এ পেশায় এখনো কোনোমতে টিকে আছেন। 

পেকুয়া বাজারের কর্মকার সনজিত বলেন, আমি ১৮ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আমাদের তৈরিকৃত জিনিসপত্র চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় পাইকাররা নিয়ে যেত, কিন্তু এখন পাইকারি তো দূরের কথা- খুচরা বিক্রি করাও কষ্টসাধ্য। বউবাচ্চা নিয়ে অনেক কষ্ট করে জীবনযাপন করছি। আমাদের এ পেশা আজ বিলুপ্তির পথে। 

মহেশখালী উপজেলার সংকর কর্মকার বলেন, বর্তমানে আমাদের এ কাজের তেমন চাহিদা নেই। রমজান ও কোরবানি ঈদ এবং ধান কাটার সময় কিছু কাজ হয়। তাছাড়া কাজ হয় না। সারা বছর কষ্ট করেই চলতে হয় আমাদের।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫