একমাসের ছুটি নিয়ে চারমাস অনুপস্থিত যমুনা সারকারখানার কারিগরের

জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৮

যমুনা সারকারখানার কারিগর আব্দুল হালিম। ছবি: জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানার (জেএফসিএল) ইনস্ট্রুমেন্ট শাখার উচ্চ দক্ষ কারিগর (এইচএসটি) আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের বিনানুমতিতে বিদেশ গমনের অভিযোগ উঠেছে। মায়ের চিকিৎসার কথা বলে একমাসের ছুটি নিলেও পরে নিজের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অতিরিক্ত তিনমাস অনুপস্থিত থেকে সম্প্রতি তিনি কারখানায় যোগদানের পায়তারা করছেন।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, যমুনা সারকারখানার ইনস্ট্রুমেন্ট শাখার ইএন্ডআই বিভাগের উচ্চ দক্ষ কারিগর মো. আব্দুল হালিম মায়ের চিকিৎসার কথা বলে গতবছরের ৭ অক্টোবর হতে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত মোট একমাসের (৩০ দিন) ছুটি নেন। ছুটির মেয়াদ অতিক্রম হওয়ার পরও তিনি যোগদান না করায় ৬ নভেম্বর ইএন্ডআই বিভাগ থেকে প্রশাসন বিভাগকে অবগত করা হয়। পরে প্রশাসন বিভাগ ২৫ নভেম্বর, ২৪ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি আব্দুল হালিমের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় পৃথক তিনটি নোটিশ দেয়। বারবার তাগাদা সত্ত্বেও একমাসের ছুটি ছাড়াও টানা আরো তিনমাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, আব্দুল হালিম ৫ অক্টোবর থেকে রাজধানীর উত্তরা হোটেল সী শেল-এ অবস্থান করেন এবং ৯ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া গমন করেন। ওইদিন একই ফ্লাইটে মোট ৭৭ জন শ্রমিক দক্ষিণ কোরিয়ায় যান, যার মধ্যে আব্দুল হালিমের ক্রমিক নম্বর ৩২ ও ইপিএস কর্মী নম্বর ২৬৮১২। অভিযোগ রয়েছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ছুটি নিয়ে তিনি এইচআরডি কোরিয়া ও বোয়েসেল নামক সংস্থার চুক্তিভিত্তিক (ইপিএস) শ্রমিক হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় গমন করেন।
এদিকে তিনি দেশে ফিরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কারখানায় যোগদানের জন্য আবেদন করেছেন। শুরুতে মায়ের অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিলেও নিজের অসুস্থতার জন্য কর্মস্থলে যোগদান করতে পারেননি বলে লিখিত আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় প্রথমে কারখানার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তার দ্বারস্থ হওয়ার নিয়ম থাকলেও তা না করে আব্দুল হালিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডের বেসরকারি ফেমাস ডায়াগনোস্টিক সেন্টার থেকে ডা. রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি ফিটনেস সনদ জমা দেন, যেখানে পরীক্ষানিরীক্ষা বা চিকিৎসাসংক্রান্ত কোনো প্রমাণপত্র সংযুক্ত করতে পারেননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত আব্দুল হালিমকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ব্যস্ত আছি বলে কেটে দেন। পরে একাধিক নম্বর থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে যমুনা সারকারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন বলেন, আব্দুল হালিমের অনুপস্থিতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে, তদন্তে বিনানুমতিতে বিদেশ গমন বা সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অনুপস্থিতির প্রমাণ পেলে, তার বিরুদ্ধে শ্রম আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।