
ডিসি পার্ক। ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুর শহরসহ আশপাশের এলাকার মানুষের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ডিসি পার্ক। এই পার্কটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে উন্নয়ন করা হয়েছে। শিশুসহ সব বয়সের মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে এ পার্কে। তবে পার্কে যাওয়ার একমাত্র সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় সেখানে দর্শনার্থীদের যেতে খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফলে পার্কে যেতে অনাগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে দর্শনার্থীদের।
স্থানীয় মানুষের বিনোদনের জন্য প্রায় দেড় যুগ পূর্বে বলেশ্বর নদীর পাড়ে নামাজপুর গ্রামে একটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মনছুর রাজা চৌধুরী। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে পার্কটি দেখভালের দায়িত্ব নেয় পিরোজপুর জেলা প্রশাসন। এরপর ২০১৫ সালে বন বিভাগের জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ডের অর্থায়নে পার্কটির উন্নয়ন করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২.৫৪ হেক্টর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত পার্কটিতে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরণের রাইড স্থাপনের পাশাপাশি অনেক পাখির ব্যবস্থা করা হয় পার্কটিতে। বৈশিষ্ট্য পার্কের পশ্চিমে গা ঘেঁষে বয়ে চলেছে বলেশ্বর নদী। বলেশ্বরের পানিতে রোদের ঝিকিমিকি আলোয় আরো এক ধাপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে পার্কটির। ঘন সবুজে বেষ্টিত চারপাশ আর মাঝখানে বাহারি ফুলের সমারোহ আপনাকে নিয়ে যাবে এক অজানা আনন্দলোকে।
উপকরণ হিসেবে পার্কে রয়েছে, কৃত্রিম ঝরনা আর পাহাড়ের নিদর্শন। চারদিকটা ঘুরে আপনি উঠতে পারেন সেখানে নির্মিত ৫তলা বিশিষ্ট টাওয়ারে। এখান থেকে নীল আকাশে পাখিদের ডানা মেলে উড়ে যাওয়ার সাথে বলেশ্বরে পালতোলা নৌকা আর জেলেদের মাছ ধরাও দেখতে পাবেন। রয়েছে নদীর কোল ঘেঁষে বসার জন্য পাকা করা সারিবাঁধা বেঞ্চ।
এমনকি দর্শনার্থীদের ক্ষুধা মেটানোর জন্য পার্কের ভিতর রয়েছে বিভিন্ন ধরণের খাবারের ব্যবস্থা। এছাড়া বনভোজনের জন্য পার্কের ভিতরে রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থা। আর তাই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্রমণ বিনোদনপ্রেমীরা ছুটে আসেন পার্কটিতে। টিকিট কেটে পার্কের মধ্যে তাদের সুন্দর মুহূর্তগুলো ব্যয় করেন।
পার্কে আগত দর্শনার্থীরা বলেন, তবে পার্কে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় দর্শনার্থীদের পার্কে যেতে প্রচণ্ড ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর তাই সেখানে যেতে দর্শনার্থীদের মারাত্মক অনীহার সৃষ্টি হচ্ছে।
পার্কের ইজারাদার আবুবক্কার জানান, তবে পার্কে যাতায়াতের সড়কটি মেরামত করা হলে এ পার্কে যেতে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমবে এবং পুরনো জৌলুস ফিরে পাবে পার্কটি এমনই প্রত্যাশা পার্কটি পরিচালনার সাথে জড়িতদের।
পিরোজপুর পৌরসভার কাউস্নিলার আনারুল কবির শিকদার বলেন, সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত ছিল। এই সড়কটি আমাদের পিরোজপুরের মেয়র মহোদয় হাবিবুর রহমান মালেকের নেতৃত্বে এই কাজটি টেন্ডার করা হয়েছে এবং এই কাজটি চলমান অবস্থায় রয়েছে। এই রাস্তাটি পুনর্নির্মাণ করা হলে এখানে বিনোদনমূলক সময় উপভোগ করার জন্য বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ সমাবেশ হবে বলে আমি মনে করি।
পিরোজপুরের উদীচী শিল্পগোষ্ঠী সভাপতি, খালিদ আবু জানান, এই জেলায় আমাদের বিনোদনের জন্য সেই রকম কোনো জায়গা নেই। বন্ধের দিনে মা বাবা তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে যে একটু ঘুরতে যাবে সেইরকম কোনো জায়গা আমাদের নেই একটাই আছে আমাদের পিরোজপুরে বিনোদনের জায়গা সেটা হলো ডিসি পার্ক। সেই শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার শহরের একটু বাইরে মোটামুটি একটা জায়গা ডিসি পার্ক। কিন্তু সেই ডিসি পার্কে যে যাবে মানুষ সেখানে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত রাস্তা যোগাযোগের ব্যবস্থা খুবই খারাপ।