Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

কৃষকের ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা

Icon

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪২

কৃষকের ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিলো দুর্বৃত্তরা

 ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

আল্লাহ তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই, তোমার কাছে বিচার দিলাম, তুমি এর বিচার করো, আমার পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। আমার ড্রাগন গাছ যারা কেটেছে তাদের তুমি বিচার করো। কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ড্রাগন চাষি কামরুল লস্কার।

গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) মধ্যরাতে কে বা কারা তার ৮০ শতক জমির মধ্যে ২৫ শতক জমির ( ৮টি লাইনের অর্ধেক করে) ২ হাজার ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে তার ড্রাগন গাছে ফল ধরার সম্ভাবনা ছিল। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশলা গ্রামের মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশুলা গ্রামের মৃত তোয়াজ উদ্দীনের ছেলে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এরিয়া জুড়ে দুই ভাইয়ের ড্রাগন বাগান। তার মধ্যে ৮০ শতক ড্রাগন বাগান কামরুল লস্কারের। ড্রাগন গাছগুলো দেখতে বেশ সতেজ। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে গাছগুলো নিচ থেকে কাটা হয়েছে। ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে গাছের নিচ থেকে এক দেড় ফুট উঁচু করে কাটা হয়েছে। কেউ শত্রুতাবশত এই ক্ষতি করেছে বলে ধারনা করছে গ্রামবাসী। তবে কে বা কারা এই ড্রাগন বাগানের গাছ কেটেছে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি। তবে তার এই বাগানে ৪-৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।

ড্রাগন চাষি কামরুল লস্কার বলেন, ২ হাজারের বেশি ড্রাগন গাছ কেটে ফেলেছে। কেটে দেওয়া গাছগুলো থেকে শুধু এক বার ফল বিক্রয় করেছি। এখন নতুন করে ফল ধরার সময় হয়েছিল। ২ বছর আগে ৮০ শতক জমিতে প্রায় ৮ হাজার ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়েছিল। এর পেছনে তার প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শুক্রবার সকালে জমিতে এসে দেখতে পাই প্রায় ২ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২২ সালে ৮০ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু কর। বাগানে মোট ৮ হাজার গাছ ছিল। যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে তার পরিমাণ ২৫ শতকের বেশি। বাগানের মাঝ থেকে ৮টি লাইনের অর্ধেক করে কেটে ফেলা হয়েছে। এই ড্রাগন বাগান করেতে এপর্যন্ত ১৫-১৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রথম বছরেই ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ড্রাগন বিক্রয় করা হয়েছিল। বাগান থেকে যে ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে সেখানে আনুমানিক ৩-৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে দাবি যারা এই ড্রাগন গাছ কেটেছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আয়তাই এনে শাস্তি দেওয়া হোক।

ড্রাগন চাষি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেড়াশুলা গ্রামের ড্রাগন চাষি কামরুল ভাইয়ের সাথে ফল বিক্রয়রে মাধ্যমে সম্পর্ক। তার বাগানে ড্রাগন গাছ কাটার সংবাদ শুনে ছুটে আসছি। আমরা দুজনে একই সাথে ড্রাগন বাগান করেছি। আমার বাগানের থেকে তার বাগানের ড্রাগন গাছ অনেক ভালো। এতো সুন্দর ড্রাগন গাছ প্রত্যেকটি গাছে নিচ থেকে এক থেকে ড়ের ফুট উঁচু করে কেটে দিয়ে গেছে। যা একজন কৃষকের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দাবি যে দুর্বৃত্তরা এই ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তাদেরকে যেন শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। যেন এমন কাজ আর করতে না পারে।

মধুহাটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, আমার বেড়াশুলা ব্লকের ড্রাগন চাষি কামরুলের ড্রাগন বাগানের ৮টি লাইনের অর্ধেক করে ড্রাগন গাছ দুর্বৃত্তরা কেটে দিয়েছে। এতে করে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। ড্রাগন গাছগুলো নিচ থেকে ১ থকে দেড় ফুট উচ্চতা রেখে কাটা হয়েছে। এতে করে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ড্রাগন গাছগুলো ভালোভাবে পরিচর্যা করতে পারলে হয়তো আগামী দুই বছর লাগবে এই পর্যায়ে ফিরে আসতে। তারপরও আমার কৃষি অফিসের মাধ্যমে ড্রাগনের প্রদর্শনী দেওয়া হয়। তাকে যেন অফিসে থেকে একটা প্রদর্শনী দেওয়া যায় সেই বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। তবে তার যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতি কোনভাবেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।

মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বেড়াশুলা ওয়ার্ডের মেম্বর ইকবাল হোসেন বলেন, কামরুল লস্কারের ড্রাগন বাগানে কে বা কারা ড্রাগন গাছ কেটে দিয়েছে। তার বাগান থেকে ২ হাজার ড্রাগন গাছ কাটা হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যেই তার বাগানে ফল আসতো। তার জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন কৃষকই তার দুঃখ বুঝতে পারবে। তবে কে এই জঘন্য কাজ করছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে প্রশাসনের কাছে আবেদন এই কাজের সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫