আদেশ পাওয়ার ৫ দিনেও বদলি হননি সেই এসিল্যান্ড, উদ্বিগ্ন সাংবাদিকরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৫

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
সাংবাদিকদের নিজ অফিসে আটক রেখে হেনস্তাকারী লালমনিরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের বদলির আদেশ এখনো কার্যকর করা হয়নি। তার বদলির আদেশে বলা হয়েছে ‘অবিলম্বে এই আদেশ কার্যকর করা হবে’ কিন্তু এখনো তা কার্যকর না হওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রকাশ করছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সমাজ।
এরআগে গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার বদলির আদেশ দেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে বদলি করা হয় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায়। কিন্তু তিনি বদলির আদেশ পেয়েও মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত লালমনিরহাট সদর উপজেলায় কর্মরত আছেন।
এদিকে গত সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবে জরুরি সভার আয়োজন করে সাংবাদিকরা তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন।
সাংবাদিকরা জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে কিছু সংখ্যক তরুণ এসিল্যান্ডের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিক সম্পর্কে কুরুচি মন্তব্য করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব তরুণ আহলে হাদীস সমর্থিত পরিবারের সদস্য। তারা এসিল্যান্ডের বদলি বাতিলের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।
লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা প্রেসক্লাবে জরুরি সভা করেছি। সাংবাদিকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।এসিল্যান্ডের বদলি দ্রুত কার্যকর ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ দ্রুত কার্যকর করা হবে। লালমনিরহাট সদর উপজেলায় যোগদান করতে বলা হয়েছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার এসিল্যান্ডকে। লালমনিরহাটে তার যোগদানে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ কার্যকর করতে কিছুটাবিলম্ব হচ্ছে। তবে এ আদেশ বহাল থাকবে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিসে জমির খারিজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য যাওয়া ৫ সাংবাদিককে নিজ অফিসে আটকে রেখে হেনস্থা করেন এসিল্যান্ড আব্দুল্লা-আল-নোমান সরকার। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর প্রস্তুতিও নেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম. এ. মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিসের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই এসিল্যান্ড অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে সাংবাদিক সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এরপর সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ক্ষুব্ধ এসিল্যান্ড তার অফিস চত্বরে অবস্থান করা চ্যানেল আই এর ক্যামেরা পার্সনের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র সঙ্গে না থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা বিচারের দাবিতে সড়কে অবস্থান নিলে তাকে বদলির আদেশ দেন বিভাগীয় কমিশনার।