
আম বাগান আমের মুকুল। ছবি: নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের প্রতিটা উপজেলার প্রতিটি বাড়ি ও আম বাগান আমের মুকুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে। নাটোর জেলার প্রতিটি উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে হরেক রকমের সুস্বাদু আমের চাষ।
পল্লীকবি জসীম উদ্দিন তার মামার বাড়ি কবিতার লিখেছেন আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা আমের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ...। বর্তমানে আমের গাছের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিক ও অন্যান্য ব্যক্তিরা।
মধুমাসের স্বাদ নিতে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
দেখা যায়, গ্রামগুলোর মধ্যে খালি জায়গা, পুকুর পাড়, রাস্তার ধারে ও বাড়ির আঙ্গিনার গাছগুলোতে শোভা পাচ্ছে কেবলই আমের মুকুল। মুকুলে মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরো কয়েক কয়েক দিন সময় লাগবে।
বাঁশিলা গ্রামের বাগান মালিক মো. রেজাউল করিম রেজা ও মফিজ সরকার জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
নলডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, এই সময়ে আমের মুকুলের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। মুকুল আসার এই সময়ে সাধারণত কুয়াশা ও পোকার আক্রমণ হয় মুকুলে। তবে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে এই সমস্যা থাকে না। ইনশাআল্লাহ, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কুয়াশা শেষ হবে। এতে মুকুলের ক্ষতির সম্ভাবনা কমবে।
নলডাঙ্গা উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. কিশোয়ার হোসেন জানান, উপজেলায় দিন দিন আমের বাগান সম্প্রসারিত হচ্ছে। এতে বাণিজ্যিকভাবে আমের বাগান তৈরি হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে আম সরবরাহ করা শুরু হবে। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৪২৫হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। গাছে গাছে আমের মুকুল আসার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি পরিচর্যা করতে হবে তা কৃষি অফিস সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছে।