লক্ষ্মীপুরে যুবককে তুলে এনে চাঁদা দাবি, পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৪, ২০:০১

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা। ছবি: লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সাধারণ পোশাকে এক যুবককে তুলে এনে চাঁদা দাবির ঘটনায় পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শককে (এএসআই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আমিনুল ইসলাম। তিনি কমলনগর থানায় কর্মরত। তাকে প্রথমে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রাম থেকে আলমগীর হোসেন নামের এক যুবককে তুলে আনেন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৪-৫ জন। পরে স্বজনদের কাছে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। আলমগীর একই এলাকার কালামিয়া সর্দারের ছেলে ও পেশায় কৃষক।
আলমগীরের স্ত্রী শাহিদা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তুলে নেওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পর আলমগীরের মোবাইলফোন থেকে তাকে কল করা হয়। বলা হয়, আলমগীরকে ছেড়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা লাগবে। ওই টাকা নিয়ে কমলনগরের ফজুমিয়ারহাট-লরেন্স সড়কের পাশে যাওয়ার জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে তিনি স্বামীকে বাঁচাতে টাকা নিয়ে স্থানীয় মেম্বারসহ কয়েকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থল যান। তখন পরিচয় জানতে চাইলে তাদের সঙ্গে পুলিশের সোর্সদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম নিজেকে পুলিশ দাবি করেন। তিনি কমলনগর থানার এএসআই বলে পরিচয় দেন।
চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি পরিচয় দেননি। টাকা নিয়ে দ্রুত তার কাছে যাওয়ার জন্য বলেন। পরে আমি আমাদের থানার ওসিকে বিষয়টি জানাই। আমিনুল কমলনগর থানার পুলিশ হয়ে রামগতিতে ঢুকে মুখ বেঁধে আলমগীরকে নিয়ে যান।’
তিনি আরো বলেন, ‘আলমগীর একসময় গাঁজা সেবন করতেন। তার বিরুদ্ধে তখনকার দুটি মামলা রয়েছে। এখন তিনি ভালো হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। কৃষিকাজ করেন।’
এএসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সোর্সের মাধ্যমে গাঁজা বিক্রির তথ্য পেয়ে আলমগীরকে আটক করে নিয়ে আসি। পরে কমলনগরের ফজুমিয়ার হাট এলাকায় তার আত্মীয়-স্বজনরা আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আলমগীরকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। আমার হ্যান্ডক্যাপ, মানিব্যাগ নিয়ে গেছে তারা। আমি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কমলনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল জলিল বলেন, এএসআই আমিনুল থানায় কোনো ধরনের তথ্য না দিয়েই সাধারণ পোশাকে একজনকে আটক করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, এএসআই আমিনুলকে পুলিশ লাইনসে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।