পুঠিয়ায় ফসলি জমিতে রাতের আঁধারে চলছে পুকুর খনন

পুঠিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:০৪

ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি
রাজশাহীর পুঠিয়ায় রাতের আঁধারে ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পুকুর খননকারীরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। চুক্তি মোতাবেক দিনে খনন বন্ধ রেখে রাতে লাইট জ্বালিয়ে খননকাজ চলে। আর খনন করা পুকুরের মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তথ্য মতে, চলতি বছরের শুরু থেকে উপজেলার শিলমাড়িয়া, জিউপাড়া ও ভালুকগাছি ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি স্থানে তিন ফসলি খেতে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন হয়েছে ও এখনো হচ্ছে। আর একেকটি পুকুর খনন হচ্ছে প্রায় ৩০ থেকে ১০০ বিঘা জমি নিয়ে।
শিলমাড়িয়া এলাকার চাষি নাজমুল ইসলাম বলেন, নান্দিপাড়া, টুলটুলিপাড়া, লেপপাড়া, সুকপাড়া ও কানমাড়িয়ায় পুকুর খনন এখন হচ্ছে। অন্যগুলো আপাতত সমঝোতার হয়নি বলে বন্ধ আছে। চলমান খনন করা মাটি ৬ থেকে ৮টি ইটভাটার মালিকের ট্রাক্টর বহন করছে। মাত্রাতিরিক্ত মাটি বহনের কারণে গ্রামীণ সড়কগুলো জরাজীর্ণ হচ্ছে। আমরা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে রহস্যজনক কারণে কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বলেন, জমির মালিকরা উপজেলার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির সঙ্গে প্রতি বিঘা জমিতে পুকুর খনন করার জন্য ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা চুক্তি করেন। আর তিনি বিশেষ সুবিধায় পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেন। এরপর রাতের আঁধারে লাইট জ্বালিয়ে ফসলি জমিতে চলে পুকুর খননকাজ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, একশ্রেণির লোকজন প্রতিদিন এই এলাকায় একরের পর এক ফসলি ক্ষেতে পুকুর খনন করছে। পুকুর খনন রোধে বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ, কে, এম, নুর হোসেন নির্ঝর বলেন, পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। তবে শুনেছি মাটি ব্যবসায়ীরা ও পুকুরের মালিকরা কৌশল পরিবর্তন করে রাতের আঁধারে খনন কাজ করছে। কিন্তু সকালে অভিযানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যেখানে ফসলি জমিতে পুকুর খনন হবে, সেখানেই জেল-জরিমানা দেওয়া হবে।