
আওয়ামী লীগ নেতার গুলিতে আহত ব্যক্তি। ছবি: কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের লাইসেন্স করা পিস্তলের গুলিতে আবুল হাসেম গাজী (৫৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী এবং রেজাউল হক (৫০) নামে এক ভ্যানচালক আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া এলাকার একটি চায়ের দোকানের সামনে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গুলি করে।
অভিযোগ ওঠা আতাহার আলী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হাসেম গাজী এবং রেজাউল হককে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হাশেম গাজীর ছেলে সোহেল ঘটনার বর্ণনায় বলেন, সন্ধ্যায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আতাহার আলী লোক পাঠিয়ে হাসেম গাজীকে শিমুলিয়া বাজারে ডেকে নেন। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করলে তার বাবা ও সেখানে থাকা ভ্যানচালক রেজাউল গুলিবিদ্ধ হন।
তার অভিযোগ, গত ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে তার বাবা নৌকার বদলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের পক্ষে কাজ করায় আতাহার আলীর সঙ্গে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে তার লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিল। কয়েকদিন আগে তাদের বাড়ির উঠানে ককটেলও নিক্ষেপ করা হয়।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, শনিবার সন্ধ্যায় গুলিবর্ষণে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহতের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আতাহার আলী এবং তার ভাতিজা রিগ্যান ও ভাগ্নে আয়নালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে নতুন করে উত্তেজনা ঠেকাতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাশেম গাজীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন। তিনি জানান, আহতদের সব রকম চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শিমুলিয়া এলাকার লোকজনসহ গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাসেম গাজীর পরিবার আমার পক্ষে নির্বাচন করেছিল। আতাহার আওয়ামী লীগ নেতা হয়েও জাসদ নেতা ইনুর পক্ষে নির্বাচন করেন। ভোটের মাঠে হেরে যাওয়ার পর আতাহার এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, শিমুলিয়া গ্রামে পূর্ববিরোধের জেরে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অভিযুক্ত আতাহারসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে। পরবর্তী কোনো ঘটনা যাতে না হয়, সে জন্য এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।