‘এই পৃথিবীটা শুধু মানুষের একার নয়; সকল প্রাণির জন্যও। তাই আমাদের টিকে থাকলে হলে চারদিকের বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করতে হবে। চারদিকের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। বন জরিপের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আমাদের কী পরিমাণ বন ভূমি রয়েছে, কত ধরণের বন্যপ্রাণী রয়েছে; সেগুলোর তথ্য নিশ্চিত হওয়া। আমরা যদি এটি নিশ্চিত হতে না পারি; তাহলে সংরক্ষণ করব কিভাবে?

আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের হলরুমে দ্বিতীয় জাতীয় বৃক্ষ ও বন জরিপের এক অবহিতকরণ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

অবহিতকরণ সভায় বন বিভাগ রাঙ্গামাটি অঞ্চলের সংরক্ষক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি। 

বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেছেন, পাহাড়ে আগে সাত-আটদিন টানা বৃষ্টি হলেও পাহাড় ধস হতো না। এখন পাহাড় ধস হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে বরফগলার ফলে যে ক্ষতি হবে বাংলাদেশ তার অন্যতম। ষাটের দশকে কাপ্তাই হ্রদ তৈরির সময় কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। পানির নিচে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়া মানুষগুলো কোথায় থাকবে তার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। এরপর মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপন শুরু করল। পরে দেখল বন বিভাগ দাবি করছে সেগুলো তাদের জায়গা। যেখানে বনায়নের জন্য বন বিভাগ যেতে পারছে না; সেখানে জরিপের কাজ কিভাবে করতে পারবেন?- আশঙ্কা প্রকাশ করেন দীপংকর।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার সিনিয়র কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. সাহেদুজ্জামান, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, সেনাবাহিনীর রাঙ্গামাটি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এরশাদ হোসেন চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য নীলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাসরিন সুলতানা, ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহিদুর রহমান মিয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নিখিল চাকমা। সভায় রাঙ্গামাটির বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় বৃক্ষ ও বন জরিপ করা হয়।