
হাতির হামলায় আহত কৃষক। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি
সীমান্তে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব চরমে। শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে শনিবার ভোরে ক্ষেতের পাকাধান রক্ষা করতে গিয়ে বন্য হাতির আক্রমণে আহত হয়েছে দুই কৃষক।
আহতরা হলেন- উপজেলার বুরুঙ্গা কালাপানি গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে খলিল মিয়া (৪৩) এবং পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীকুড়া গ্রামের মো. অলিলের ছেলে আলম মিয়া (৩২)।
স্থানীয়রা জানায়, ৩৫/৪০টি বন্য হাতি বাচ্চাসহ দল বেঁধে প্রায় ১৫ দিন ধরে বাতকুঁচি টিলাপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে তাণ্ডব চালিয়ে আসছে।
গত সপ্তাহে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে উমর আলী (৬০) নামে এক কৃষক মারা যায়। এসময় ৬/৭টি বসতঘর ভেঙে পাকাধান খেয়ে সাবাড় করে। ধ্বংস করে ফলের বাগান।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩৫ থেকে ৪০টি হাতি বাচ্চাসহ প্রবেশ করে বুরুঙ্গা কালাপানি গ্রামে। হামলা করে ফসলের মাঠে। স্থানীয়রা হাতির দলকে তাড়াতে চেষ্টা করেন। রাতভর হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব চলতে থাকে।
৪ মে শনিবার ভোর হয়ে গেলেও হাতির দল ফসলের মাঠ থেকে উঠেনি। এক পর্যায়ে গ্রামবাসী হাতির দলকে ফের তাড়া করে। হাতিও তাদের ধাওয়া দেয়।
এক পর্যায়ে হাতির ধাওয়ায় দৌড় দেয় স্থানীয়রা। এসময় একটি হাতির পায়ে পিষ্ট হয় খলিল মিয়ার বাম পা। অপর দিকে হাতি শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে আলম মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে ছুড়ে ফেলে। আলম ওই অবস্থায় গাছের ডাল ধরে উঁচুতে ঝুলে প্রাণে বেঁচে যায়। পরে হাতি পাহাড়ে উঠে গেলে স্থানীয়রা খলিল ও আলমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। খলিল মিয়া ঝিনাইগাতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে ভাঙা পা প্লাস্টার করে পড়ে আছেন বিছানায়। আর আলম তার পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন।
তিনদিনে বুরুঙ্গা কালাপানি এলাকায় হাতির আক্রমণে মন্নাছআলী, নছর আলী, সিদ্দীক, খলিল, সোহেল, রূপচানসহ অন্যান্য কৃষকের ৫/৬ একর জমির পাকা ধান একেবারে শেষ হয়ে গেছে। ধ্বংস হয়েছে কাঠবাগান। তাই কৃষক ভয়ে আধা পাকা ধান কেটে ফেলছে।
এদিকে এরশাদ আলী, উকিল উদ্দীন, আক্তারুজ্জামান, মোবারক, জয়নালসহ গ্রামবাসী কষ্টের কথা উল্লেখ্য করে বলেন, হাতি তাড়াতে সরঞ্জাম হিসেবে প্রয়োজনীয় ডিজেল ও লাইট তারা পান না। তাই হাতি তাড়ানোর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ সোলার ফেন্সিং ও জেনারেটরের দাবি জানান তারা।