Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হুমকির ভিডিও ভাইরাল, অভিযুক্তের দাবি ‘এডিট’ করা

Icon

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ১২:০৭

চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হুমকির ভিডিও ভাইরাল, অভিযুক্তের দাবি ‘এডিট’ করা

চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা ও ভোট দিতে এলে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে এলাকা ছাড়া করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে স্থানীয় ভোটারদের নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন তিনি। তবে এটি ‘সুপার এডিট’ করা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান।

গত শনিবার (১১ মে) রাতে চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় একটি নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে এসব হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান। ওই সময় তার বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

আব্দুস সালাম খান চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুজ্জামান আকন্দ উজ্জ্বলের সমর্থক।

ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওটিতে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খানকে বলতে শোনা যায়, ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ও (বিল্লাল হোসেন) যেন শূন্য, অর্থাৎ নিজের ভোটও যেন দিতে আইতে না পারে। এইবার ভোট হবে ইভিএমে। আপনারা ভোট কেন্দ্র যাবেন এবং বলবেন, এইয়া বুঝি না। ইভিএমে কখনো ভোট দেই নাই, আপনি আসেন ভোট দিয়া যান। আপনারা এই কথা ভেতরে বইয়া বইয়া বলবেন, আমার এজেন্ট তা শুনবো। ভোট দিমু ঘোড়ায়, ভোট দিমু তালায়, ভোট দিমু ফুটবলে। যে এটা না পারবে সে আমাদের সন্দেহের তালিকায় থাকবে। আর যে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে না যাবে সেও সন্দেহের তালিকায় থাকবে।’

ভিডিও ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আর এই দিপু যদি আমাদের চন্দ্রপুরে ভোট চাইতে আসে তাহলে ওদের দৌড়াইতে পারমু না? আজ থেকে ওরা যাতে চন্দ্রপুর ভোট চাইতে আইতে না পারে। কোনো হুমকি ধামকি না, যা মারার সামনে মারবেন। কেউ যদি তলে তলে খাতির রাখেন দুই দলের মাইর খাইবেন।  আমরা ভোটের মাধ্যমে এমপি সাহেবকে বুঝাইয়া দিমু ওগো তিন কুলাঙ্গার গেলে কি হইবো, আপনার হাজার হাজার ভাই আছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২১ মে। এখানে চেয়ারম্যান পদে মোট পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেনের চাচাতো ভাই ও সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া (আনারস প্রতীক), তার স্ত্রী ফেন্সি বেগম (কাপ–পিরিচ প্রতীক), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ নুরুল আমীন কোতোয়াল (মোটরসাইকেল প্রতীক), জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান আকন্দ উজ্জ্বল (ঘোড়া প্রতীক) ও আল আমিন খান (হেলিকপ্টার প্রতীক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২ মে প্রতীক বরাদ্দের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সমর্থকেরা কামরুজ্জামান আকন্দ উজ্জ্বলের পক্ষে ঘোড়া প্রতীকের প্রচারণা শুরু করেন। অন্যদিকে বিল্লাল হোসেন ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরাও আনারস প্রতীকের প্রচারণা শুরু করেন। 

আনারস প্রতীকের প্রার্থী বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন হুমকি–ধামকির শিকার হচ্ছি। গতকাল চন্দ্রপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভোট চাইতে গেলে আমাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। যা আপনারা ভিডিওতে দেখেছেন। আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কারো সাহায্য পাচ্ছি না। এই অবস্থায় আমি প্রাণ শঙ্কায় আছি। বিষয়টি আমি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাকে অবগত করেছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান বলেন, আমি আসলে ওভাবে হুমকি–ধামকি দেই নাই। যেই জিনিসটা ভাইরাল হয়েছে, আমার মনে হয় না আমি এরকম খারাপ কথাবার্তা বলেছি। এটা প্রযুক্তির যুগ, অনেক সময় অনেক কিছু সুপার এডিট করা যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫