Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

লালমনিরহাটে জাল দলিল তৈরি চক্রের প্রধান গ্রেপ্তার

Icon

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১৯:৩৭

লালমনিরহাটে জাল দলিল তৈরি চক্রের প্রধান গ্রেপ্তার

সিআইডি অফিস। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে জাল দলিল তৈরি চক্রের প্রধান মহুবর রহমান (৬০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। আজ সোমবার (২০ মে) দুপুরে সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার মহুবর ওই গ্রামের মোছাব্বের আলীর ছেলে। মহুবরসহ আরো কয়েকজন দীর্ঘদিন থেকে একাধিক জমির দলিল জাল করার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। 

সিআইডি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, মুহুবর রহমান প্রতিবেশী তোফাজ্জল হোসেনের রেকর্ডভুক্ত সাড়ে তিন শতাংশ জমির জমিদাতা, গ্রহীতা ও তফসিল পরিবর্তন করেন এবং দলিলের অন্যান্য লেখা ঠিক রেখে সাড়ে তিন শতাংশ জমির একটি জাল দলিল তৈরি করেন। ওই জমি গত বছরের ২৬ নভেম্বর অনলাইনে ১১০/৯৪ নম্বর দলিল মূলে সদর উপজেলা ভূমি অফিসে নিজের নামে খারিজের জন্য আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তোফাজ্জল হোসেন উক্ত দলিলটির জাবেদা সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে উত্তোলন করে দেখতে পান ওই দলিলটি মহুবর রহমানের নামের দলিল নয় বরং তা মো. জহর উদ্দিন নামে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। একইসাথে তোফাজ্জল হোসেন দলিলের জাবেদা পর্যালোচনা করে দেখতে পান মহুবর রহমান দলিলটির নম্বর ব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণামূলক ভাবে হুবহু আরেকটি দলিল তৈরi করে নামজারীর জন্য আবেদন করেছেন। 

পরে রবিবার (১৯ মে) তোফাজ্জল হোসেন জাল দলিল তৈরির অভিযোগে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে সিআইডির সহায়তা চান। বিষয়টি অনুসন্ধানে সিআইডির লালমনিরহাটের কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে তদন্তে নামেন। পরে রবিবার দুপুরে মহুবর রহমানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে এবং জাল দলিল জব্দ করে সিআইডি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক জাল দলিল তৈরির বিষয়টি মহুবর স্বীকার করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় সিআইডি।

অভিযোগ উঠেছে জাল দলিলের মাধ্যমে মহুবর রহমান প্রতিবেশী মোহাম্মদ লিটন, লাভলু মিয়া, আব্দুস সালামসহ অনেকের জমি দখল করেছেন। মহুবর রহমানের জাল দলিল চক্রের অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। 

প্রতিবেশী লাভলু মিয়া বলেন, আমার এবং আমার জ্যঠাতো ভাইয়ের ৬১ শতাংশ জমি জাল দলিল দেখিয়ে নিজের নামে খারিজ করার আবেদন করেছিলেন মহুবর। পরে এসিল্যান্ড জাল দলিলের বিষয়টি জানতে পেরে খারিজ আটকে দেয়। এরপর আবারও আমাদের আরও একটি জমি তার নামে খারিজ প্রক্রিয়ার শেষ ধাপে ধরা পড়ে যে, দলিলের নম্বর ঠিক থাকলেও দলিলটি মহুবরের না। পরে আমরা জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।

আরেক প্রতিবেশী আব্দুস সালাম বলেন, আমার পৈতৃক জমি জাল দলিল দেখিয়ে দখল করেছে মহুবর। আমার ছেলে সরকারি চাকরি করে বিধায় মামলা করতে নিষেধ করেছে। সেই জমি অবৈধভাবে ভোগ করে আসছেন মহুবর। তার কারণে এলাকার অনেকেই অতিষ্ঠ।

মোহাম্মদ লিটন বলেন, মহুবর রহমানের প্রথম জালিয়াতি ধরা পড়ে খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী আছে যাদের সহায়তায় তিনি এলাকার অনেকের জমি দখল করেছে। শুধু তাই নয়, তিস্তার চরের জমিও তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির জমি জাল দলিলের মাধ্যমে দখল করেছেন।

সিআইডির লালমনিরহাট অফিসের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল হাই সরকার বলেন, মহুবর রহমান একাধিক জাল দলিলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে জাল দলিলের আরও একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আমরা তাকে আটকের পর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জাল দলিলও জব্দ করেছি। আসামিকে ইতিমধ্যেই আদালতে প্রেরণ করেছি। এর সাথে কারা জড়িত আছে তা জানতে আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও তিনি জানান।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫