কিশোরগঞ্জে করোনা আক্রান্ত ৪৭ চিকিৎসক, হুমকিতে চিকিৎসা কার্যক্রম

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২০, ২০:৩৫

কিশোরগঞ্জে এখন পর্যন্ত ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৪৭ জনই চিকিৎসক। তাই হুমকির মুখে রয়েছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম।
জেলার সিভিল সার্জন মুজিবুর রহমান জানান, শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) এক জনসহ জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা হলো ১৭৫। এর মধ্যে ৪৭ জনই চিকিৎসক। এর বাইরে পাঁচ জন পুলিশ সদস্য ও এক জন সহকারী কমিশনার রয়েছেন।
জেলায় এ পর্যন্ত তিন জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও জানান সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন জানান, ব্যাপকহারে চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়াতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
গত ১৪ এপ্রিল করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আরো তিন-চারটি হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম অচল হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জেলা বিএমএ-এর সহ-সভাপতি খালেকুল ইসলাম ববি বলেন, সন্দেহভাজন চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহের পর ঢাকা থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কাজে বহাল রাখার কারণে সহকর্মীসহ অন্যরা সহজেই আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর উপজেলাওয়ারী হিসাবে কিশোরগঞ্জ সদরে ১৪ জন, হোসেনপুরে তিন জন, করিমগঞ্জে ১৬ জন, তাড়াইলে ২৪ জন, পাকুন্দিয়ায় চারজন, কটিয়াদীতে ১২ জন, কুলিয়ারচরে ১০ জন, ভৈরবে ৪২ জন, নিকলীতে পাঁচজন, বাজিতপুরে ছয়জন, ইটনায় ১১ জন, মিঠামইনে ২৪ জন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলা বিএমএ-এর সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহাব বাদল বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলায় ইতিমধ্যেই অনেক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া আরও অনেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
প্রধানত যথাযথ মানসম্পন্ন পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব, চিকিৎসকের কাছে রোগীর তথ্য গোপন করা ও অনেক রোগীর প্রকাশ্য উপসর্গ না থাকার কারণেই অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে তাড়াইলে আট জন, কটিয়াদীতে আট জন, মিঠামইনে ছয় জন, করিমগঞ্জে তিন জন, ভৈরবে আট জন, ইটনায় চার জন, বাজিতপুরে দুই জন, নিকলীতে দুই জন ও কুলিয়ারচরে এক জন চিকিৎসক কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এর বাইরে জেনারেল হাসপাতালে চারজন চিকিৎসক এবং সরকারি হাসপাতালের বাইরে একজন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানানো হয় সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে।