তৃতীয় ধাপে দুই একটি ঘটনা ছাড়া বগুড়া জেলার তিন উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। বগুড়া সদরে ভোটগ্রহণের পর ব্যালটে প্রতীক বিভ্রাটের কারণে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

আজ বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনার কাজ শুরু হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

বগুড়া জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনে বগুড়ার সদর, শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদে ৪৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সদর উপজেলায় ১৪৬টি কেন্দ্রে মোট ৪ লাখ ৩৪ হাজার ২২৯ জন, শিবগঞ্জে ১১৪ কেন্দ্রে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৫ জন এবং শাজাহানপুরে ৭২ কেন্দ্রে ২ লাখ ৩২ হাজার ৩১৮ জন ভোটার রয়েছেন।

বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আবু সুফিয়ান সফিক ঘোড়া প্রতীক, মো. সুলতান মাহমুদ খান মোটরসাইকেল প্রতীক এবং শুভাশীষ পোদ্দার লিটন আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ মোটরসাইকেল, মোস্তাফিজার রহমান আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন। শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এম সুলতান আহম্মেদ ঘোড়া প্রতীক, মো. সাজেদুর রহমান সাহীন আনারস প্রতীক, মো. সাদ্দাম হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক এবং মো. সোহরাব হোসেন ছান্নু, মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বুধবার ভোটগ্রহণকালে বগুড়া সদরে ব্যালটে প্রতীক বিভ্রাটের কারণে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণের প্রায় আড়াই ঘণ্টা সকাল সাড়ে ১০ টায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, বগুড়া সদরে চেয়ারম্যান ও ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। আর পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ইফতারুল ইসলাম ‘কাঠি আইসক্রিম’ প্রতীক বরাদ্দ পান। পরে ভোটগ্রহণের ব্যালটে কুলফি আইসক্রিম প্রতীক ছাপা পায়। এ নিয়ে অভিযোগ করা হলে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার সঙ্গে আলোচনা করে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল ইসলাম জানান, ব্যালটে তার বরাদ্দ দেওয়া ‘কাঠি আইসক্রিম’ প্রতীক নেই। এর বদলে সেখানে ‘কুলফি আইসক্রিম’ দেওয়া হয়েছে। তিনি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন; ব্যালটে নির্ধারিত প্রতীক না থাকায় ভোট দেননি। ‘প্রতীক বরাদ্দের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত কাগজে কাঠি আইসক্রিমের নমুনা ছবি সরবরাহ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী পোস্টার ছাপানোসহ প্রচারণা করা হয়েছে। এখন ভোট দিতে গিয়ে ভোটাররা ব্যালট পেপারে কাঠি আইসক্রিম না পাওয়ায় অভিযোগ করা হয়।

বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া ও মোটরসাইকেল প্রতীকের এজেন্টকে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। সকালে শহরের ঠনঠনিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র, ভিটিটিআই কেন্দ্র, ঠনঠনিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতে এজেন্ট ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অভিযোগ করেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আবু সুফিয়ান সফিক, মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ খান রনি।

প্রার্থী আবু সুফিয়ান সফিক জানান, বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকেই আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা।

এছাড়া জেলার শাজাহানপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলাতেও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথাও কোন তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি। 

রিটার্নিং কর্মকর্তা বগুড়ার অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আবু ছাইদ জানান, ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনার কাজ চলছে।