স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় স্কুলছাত্রীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ১৮:৫৯

স্কুলছাত্রীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন। ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি
স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে (১৩) শিকলে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে নিজ পরিবারের সদস্য দর বিরুদ্ধে।
গতকাল শনিবার (১ জুন) রাতে মা মারুফা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা নিজ ঘরের মধ্যে শিকলে বেঁধে আটক রাখা হয় হাবিবা নামের স্কুল ছাত্রীকে। ওইদিন সকালেই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসেন তিনি।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী হাবিবা আক্তার ওই গ্রামের জামাল হাওলাদার ও মারুফা বেগম দম্পতির মেয়ে। তিনি দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় নুরু বাহাদুর ও জামাল তাজ জানান, দুই মাস আগে হাবিবাকে রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে সাজিদল্লে য় দেয় তার পরিবার।
বিয়ের পর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের নির্যাতনের শিকার হন কিশোরী গৃহবধূ। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শনিবার সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে বাবার বাড়ি যায় স্কুলছাত্রী।
তখন মা মারুফা বেগম, বাবা জামাল হাওলাদার ও দুলাভাই আলামিন আকনসহ কয়েকজন মিলে হাবিবাকে শিকল এবং রশি দিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বাঁধে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক মাহফুজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন একটি টিম। তবে পুলিশ আসার খবরে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় হাবিবার পরিবারের সদস্যরা।
হাবিবার মা মারুফা বেগম বলেন, ‘আমরা দরিদ্র হওয়ায় হাবিবার লেখাপড়া খরচ বহন করতে পারছিলাম না। তাই তাকে বিয়ে দিয়ে দেই। স্বামীর বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ১৩ বছরের স্কুলছাত্রীর বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল সরদারসহ স্থানীয় মাতবররা। এ বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তারা।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। তবে ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।