পুঠিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো অসামাজিক কাজের আখড়া

পুঠিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৪, ১৫:৪৮

পুঠিয়ার জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। ছবি: পুঠিয়া প্রতিনিধি
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়ায় অবস্থিত জেলা পরিষদ ডাকবাংলোটি প্রায় দুই যুগ ধরে পরিত্যক্ত। জানা যায়, কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব ও রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় বাংলোটি জরাজীর্ণ হয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু বখাটে ও মাদক ব্যবসায়ীরা এখানে প্রকাশ্যে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ, জুয়ার আসর, মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সকল অপকর্মের বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অবহিত করেও কোনো সুরাহা হয়নি।
এক সময়ের খরস্রোতা নদী মূসা খাঁর তীরে, উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে ব্রিটিশ আমলে এক একর ২২ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় ঝলমলিয়া ডাকবাংলো। স্বাধীনতার পর বাংলোটি সংস্কার করা হলেও প্রায় দুই যুগ থেকে কর্তৃপক্ষের আর কোনো নজরদারি নেই। অবহেলা ও অযত্নে বাংলোটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বাংলোর চারপাশে ঝোপঝাড় হয়ে গেছে। চারচালা টিনের একটি অতিথিশালার দরজা-জানালা তালাবদ্ধ। পাশে দুইটি আবাসিক ভবনের উপরের চালা, দরজা-জানালা কিছুই নেই। শুধু চারপাশের দেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। কোনো কোনো দেয়ালের বেশীরভাগ ইট লোকজন খুলে নিয়ে গেছে। ভবনের চারপাশে মাদকদ্রব্যের বোতল ও উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু হাসেদ বলেন, স্বাধীনতার পর কয়েক বছর বাংলোটিতে লোকসমাগম ছিলো। এরপর প্রায় ২৫/২৬ বছর থেকে নজরদারির অভাবে ডাকবাংলোটি এখন ভূতুড়ে এলাকা হয়ে গেছে। এখন এলাকার কিছু বখাটে লোক মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর ও বিভিন্ন অসামাজিক কাজে এটি ব্যবহার করছে। বাংলোর পাশেই ঝলমলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিনিয়ত বখাটেদের উৎপাতের শিকার হয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে কয়েকবার অবহিত করা হলেও কোনো সুফল আসছে না।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য আসাদুজ্জামান (মাসুদ) বলেন, জেলা পরিষদ ডাকবাংলায় অসামাজিক কার্যকলাপ, জুয়ার আসর, মাদক ব্যবসা হয় এ বিষয়ে আমার জানা ছিলো না। আপনি বললেন আমি এরপর জানতে পারলাম। তবে আমি শুনেছি জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সীমানা প্রাচীর দুইটা জায়গায় ভাঙ্গার কারণে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারে। আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই মেরামত কাজ শুরু করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.কে.এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। ডাকবাংলোর বিষয়টি আমি শুনেছি। এখনো ওই এলাকায় যাওয়া হয়নি। তবে শিগগিরই জেলা পরিষদের মাধ্যমে বাংলোটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হবে।