বিবস্ত্র করে নির্যাতন, কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১৭:৪০

প্রতীকী ছবি
জমি থেকে হাঁস তাড়ানোকে কেন্দ্র করে ইসরাত জাহান মৌফি (১৮) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রতিবেশিদের হাতে বিবস্ত্রের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
গত বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের গুড়িয়াদহ গ্রামে ওই কলেজছাত্রীর বাড়ি থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মৌফি ওই গ্রামের আব্দুল মতিন মন্ডলের মেয়ে এবং স্থানীয় কাউনিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহত কলেজছাত্রীর বাবা আব্দুল মতিন মন্ডল বাদী হয়ে প্রতিবেশী ১২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, প্রতিবেশী মৃত শরিয়ত উল্লাহ মন্ডলের ছেলে সুলতান মন্ডল, সিরাজ আলী মন্ডল ও শাহজাহান আলী মন্ডলের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন থেকে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছে। এরই জেরে গত বুধবার সকালে জমি থেকে হাঁস তাড়ানোকে কেন্দ্র করে ঝগড়া বিবাদের একপর্যায়ে আসামিপক্ষরা আব্দুল মতিন মন্ডলের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এসময় তারা মতিনের স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী, কলেজ ছাত্র ছেলে ইউসুফ ইয়েম জোয়ান মাহিম (২১) ও মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাহান মৌফিকে (১৮) পিটিয়ে আহত করেন। এসময় ময়না, স্বর্ণা ও সাগরিকাসহ কয়েকজন নারী মিলে কলেজছাত্রী মৌফির পড়নের কাপড় ছিঁড়ে বিবস্ত্র করেন। পরে গ্রামবাসীরা তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে কলেজছাত্রী ইসরাত জাহান মৌফি গ্রামবাসীদের সামনে বিবস্ত্র হওয়ায় ভীষণ লজ্জা পেয়ে যান। আহতরা সকলেই হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হলেও তিনি ঘর থেকে আর বের হননি। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে বাড়িতে একা থাকার সুযোগে ঘরে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে নিহত কলেজছাত্রীর বাবা আব্দুল মতিন মন্ডল জানান, আমার মেয়েকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে তাতে আমার দুঃখ নেই, কিন্তু ওরা যদি সবার সামনে বিবস্ত্র না করতো তাহলে আত্মহত্যা করতো না। ওদের জন্যই আমার মেয়েকে হারালাম। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, ওই ঘটনায় নিহত কলেজছাত্রীর বাবা আব্দুল মতিন মন্ডল বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার লিখিত অভিযোগ দিলে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।