গাইবান্ধার দুঃখ: ঝুঁকিপূর্ণ রেগুলেটর

আতিকুর রহমান আতিক, গাইবান্ধা
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ২২:১৮

ঝুঁকিপূর্ণ রেগুলেটর। ছবি- লেখক
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের বাদিয়াখালী টু তালুকজামিরা রোডের মাঝ পথে সারদাগাড়ী বিলের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে একটি রেগুলেটর।
রেগুলেটরটি ফছির গেট নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। কারণ রেগুলেটরটি নির্মাণের পর এই এলাকার ফছি আকন্দ নামে এক ব্যক্তি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার থাকার জন্য সেখানে একটি কক্ষও ছিল।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালের প্রবল বন্যার পানির চাপে রেগুলেটরটির পশ্চিম পাশের মাটি দেবে যায় এবং চার পাশের বিভিন্ন স্থানে ফেটে ভেঙে যায়। তারপর থেকে রেগুলেটরটি আর সংস্কার কিংবা নতুন করে নির্মাণ না করায় আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
রাস্তাটি গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী টু গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হওয়ায় সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজি, মিনিট্রাক, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। যার কারণে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অটো ভ্যানচালক আপেল আকন্দ বলেন, দুদিন আগে এখানে বৃষ্টির পানি জমার কারণে স্কুলে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল থেকে পিছলে পড়ে যান এক স্কুলছাত্রী। প্রতিদিন ছোট-বড় এ রকম দুর্ঘটনা ঘটছেই। কেউ যদি পিছলে নিচে পড়ে যায় তার বাঁচার সম্ভাবনা কম বলে তিনি জানান।
এই রাস্তা দিয়ে দিন ও রাতে ছয়বার যাতায়াতকারী পলাশবাড়ী উপজেলার তালুক জামিরা বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে ছয়বার যাতায়াত করি। বৃষ্টি হলে পিচ্ছিল হয়ে যায় এবং গাড়ি থেকে প্রায় মানুষ পড়ে যায়। আমিও দুদিন পড়ে গেছিলাম।
গাইবান্ধা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সারদাগাড়ী বিল ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য তদানীন্তন ইপি ওয়াপদার অধীনে ১৯৫৬-৬০ সালে সারদাগাড়ী নিষ্কাশন প্রকল্প শিরোনামে একটি সেচ ও নিষ্কাশন প্রকল্প চকবরুল এলাকায় নির্মিত হয়। উক্ত প্রকল্পে ওই এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৬শ ৩৭ হেক্টর জমি উপকৃত হয়। এ প্রকল্পে ৯ কিলোমিটার খাল ও দুটি রেগুলেটর বিদ্যমান রয়েছে।
বাদিয়াখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মো. জেলাল আকন্দ বলেন, রেগুলেটরটি অনেক আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। ২০১৯ সালে বন্যার পানির চাপে পশ্চিম পাশের মাটি দেবে যাওয়ায় আরও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত রেগুলেটরটি নতুন করে নির্মাণ করা দরকার।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, সারদাগাড়ী বিলের চকবরুল এলাকায় নির্মিত রেগুলেটরটি বিগত বন্যায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত রেগুলেটরটি পুনঃনির্মাণের জন্য আমরা আমাদের দপ্তর থেকে নকশা প্রেরণ করি। ইতোমধ্যে নকশা পেয়ে গেছি। আমরা আগামী বছরের বাজেট বরাদ্দের মধ্যেই এটা পুনঃনির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠাব।