আওয়ামী সরকার পতনের একদিন আগে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ৩৬৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও ৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে বরিশাল সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি’র সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের ভাইসহ সিটি করপোরেশনের আরও ১৫ জন কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে এ মামলায়। যাদের মধ্যে অনেকেই এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্ত কাউন্সিলররা হলেন- সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্না, এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের ছোট ভাই ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ শাসুদ্দোহা আবিদ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামজিদুল কবির বাবু, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্না হাওলাদার, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হোসাইন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইমরান মোল্লা, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর কোহিনুর বেগম, সালমা আক্তার শিলা ও আয়েশা তৌহিদ লুনা।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান খান ফারুক এবং কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

গত প্রায় ১৬ বছরে কোতয়ালী মডেল থানায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির করা এটিই প্রথম মামলা। ইতিপূর্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা নানাভাবে হমলা এবং নির্যাতনের শিকার হলেও আইনী সহযোগিতা পাননি থানা পুলিশ থেকে। উল্টো পুলিশের মামলায় কারাভোগ করতে হয়েছে নেতাকর্মীদের।

এদিকে, মঙ্গলবার দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ‘গত ৪ আগস্ট দুপুরে ৬শ থেকে ৭শ জন পিস্তল, শটগান, ককটেল, রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নগরীর সদর রোডে বিএনপির অফিসে হামলা চালায়।

তখন এক ও দুই নম্বর আসামির নির্দেশে ৩, ৪ ও ৬ নম্বর আসামি পিস্তল দিয়ে গুলি বর্ষণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয় বিএনপি কার্যালয়ে। এর ফলে আসবাবপত্র, জিয়া স্মৃতি লাইব্রেরীর বইসহ মূল্যবান দ্রব্য নষ্ট হয়ে যায়।

কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।