‘মালায়নের পুত তর চোখ উঠায়া ফালামু’, মাছ ব্যবসায়ীকে হুমকি

সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪, ২৩:৫৮

ভুক্তভোগী নিরঞ্জন মালো। ছবি: সাভার প্রতিনিধি
ঢাকার ধামরাইয়ে নিরঞ্জন মালো (৫০) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে মারধর ও কোপানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
আজ বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নিরঞ্জন মালো ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্তরা হলেন- স্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল বাশার মন্টু (৫২), যুবদল নেতা আইয়ুব আলীসহ (৫০) আরও ১৫-২০ জন।
ওই মাছ ব্যবসায়ীর দাবি, গত ইউপি নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করায় তাকে দীর্ঘ দিন ধরেই হুমকিধামকি দিয়ে আসছিল পরাজিত ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা আবুল বাশার মন্টু। সম্প্রতি সরকার পতনের পর থেকেই তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি। বুধবার তাকে দেশিয় অস্ত্রসহ তাকে মারধর ও কোপানোর চেষ্টা করেন তারা। তিনি পালিয়ে রক্ষা পান।
নিরঞ্জন মালো বলেন, ‘গত ৬ আগস্ট মাছ বিক্রি করছিলাম, সেসময় ইউপি সদস্যের ভাতিজা আমাকে সাবধান করে জানায়, আমাকে মারধরের জন্য মেম্বার লোক জড়ো করছে। আমি যাতে সাবধান থাকি। তবে আমি কোথাও যাব না বলে জানিয়ে দেই। এরমধ্যেই সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘মালায়নের পুত তর চোখ উঠায়া ফালামু। একবারে দুইডা চাবি দিয়্যা, দুইডা চোখ উঠায়া ফালামু।’’ আজ বাসস্ট্যান্ডে গেছি, তখন আমাকে নির্বাচনে বিপক্ষে ছিলাম কেন, বলেই মারতে আসে। আমি সেখান থেকে সরে যাই। এরপর মন্টু মেম্বার ও আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে আরও ১৫-২০ জন এসে আমাকে মারার চেষ্টা করে। তবে আমি পালিয়ে রক্ষা পাই। তাদের কাছে ছ্যান, চাপাতি, ছুরিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র ছিল। হিন্দু হওয়ায় তারা আমাকে নিরীহ পেয়ে মারার চেষ্টা করে। আর কাউকে এভাবে বলেনি। আমি এখন চরম অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছি। পুলিশকে ফোন করেছিলাম। তারা সেনাবাহিনীর নম্বর দিয়েছে। তাদের জানিয়েছি।’
গাংগুটিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঈমান আলী বলেন, ‘তিন দিন আগে নিরঞ্জন তাকে হুমকির কথা জানায়। আজকে শুনি ঝগড়া লাগছে। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে যাই। গিয়ে দেখি মন্টু মেম্বার ও আইয়ুব আলীরাসহ আরও কয়েকজন ছ্যানসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে আনা হয়। এই বিষয়ে থানায় খবর দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য অভিযুক্ত আবুল বাশার মন্টু বলেন, ‘ও অযথা আমার সঙ্গে লাগতে আসে। এ কথা, সে কথা বলে। তাছাড়া কিছু না। আমার মেম্বারির সময় থেকে ঝামেলা। সেটা নিয়ে একটা বিবাদ।’ তবে মারধর ও ধারালো অস্ত্রের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
ধামরাই থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হুমায়ূন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নেই। আর খবর পেলেও বড় ঘটনা ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই।’