বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নে দুর্বৃত্তদের হামলায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। দুর্বৃত্তরা তাদের কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে। নিহত দু’জন সম্পর্কে চাচতো ভাই।

গত শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের পশ্চিম সাতলা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। রাতেই আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইদ্রিস হাওলার এবং রবিবার সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাগর হাওলাদার নামে অপরজনের মৃত্যূ হয়।

নিহতদের মধ্যে ইদ্রিস হাওলাদার পশ্চিম সাতলা গ্রামের সোহরাব হাওলাদারের ছেলে এবং সাতলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। পেশায় তিনি সাতলা বাজারের একজন মাছের ফিট ব্যবসায়। অপরজন ইদ্রিসের চাচাতো ভাই সাগর হাওলাদার (২২)

পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শনিবার (২৪ আগষ্ট) রাত ১০ টার দিকে ইদ্রিস ও সাগর মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে পশ্চিম সাতলা ব্রিজের পশ্চিম পাড় অতিক্রমকালে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। তারা কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইদ্রিস ও সাগরকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তারা ইদ্রিসের মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।

এদিকে, রাতেই স্থানীয়রা তাদের দু’জনকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নেয়ার পথে ইদ্রিস হাওলাদারের মৃত্যু হয়। গুরুত্বর আহত সাগর হাওলাদারকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত ইদ্রিস হাওলাদারের স্ত্রী জানিয়েছেন, সাতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাওলাদার, তার ভাই যুবলীগ নেতা আসাদ হাওলাদার ও চাচাতো ভাই ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হাওলাদারদের বিরুদ্ধে মাছের ঘের দখল, আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ একাধিক মামলার বাদী ছিলেন ইদ্রিস হাওলাদার।

তিনি জানান, সাতলায় মৎস্য ঘেরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে কোটি টাকার ক্ষতি করার মামলায় প্রায় ৪ মাস আগে বিএনপি নেতা ইলিয়াস হাওলাদার, তার ভাই ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও আসাদ হাওলাদারকে হাজতবাস করতে হয়েছে। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকেই ইদ্রিস হাওলাদারকে আসামিরা হুমকি দিচ্ছিলেন। বিষয়টি তিনি পরিবারকেও জানিয়ে ছিলেন। মামলার আসামিরাই দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের স্ত্রীর।

উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাফর অহম্মেদ বলেন, ‘ঘটানার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের টিম মাঠে রয়েছে। নিহতদের পরিবার  লিখিত অভিযোগ দিলেই মামলা দায়ের করা হবে। নিহত ২ জনের মৃতদেহ শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।’