ঝিনাইদহে ১১ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৯
নিহত ছাত্রদলকর্মী মিরাজুল ইসলাম ও শিবির নেতা ইবনুল ইসলাম পারভেজ।
ঝিনাইদহে ছাত্রদলকর্মী মিরাজুল ইসলাম ও শিবির নেতা ইবনুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় আলাদা দুইটি মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকুরিচ্যুত), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখসহ ১১ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন নিহতদের স্বজনরা। আদালত মামলা দুটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগরের বাসিন্দা মিরাজুল ইসলাম ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ বিকেলের দিকে পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এসময় অভিযুক্তরা তার পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে না পারার কারণে নিখোঁজ হন মিরাজুল। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা জেলার খাড়াগুদা মাঠে একটি অজ্ঞাত মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নিহতদের স্বজনরা। এসময় মিরাজুলের মরদেহে গুলির চিহ্ন দেখতে পান তারা।
স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ কর্মকর্তারা টাকা না পেয়ে মিরাজুলকে গুলি করে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকুরিচ্যুত), এসআই শাহরিয়ার হাসান (বর্তমানে ইন্সেপেক্টর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা), সাবেক উপ-পরিদর্শক আমিনুল এহসানসহ একাধিক পুলিশ সদস্যকে আসামি করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহতের মা মোছা. বুলবুলি।
অপর মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালে ইবনুল ইসলাম পারভেজ শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। অভিযুক্ত আসামিরা একই বছরের জুন মাসে পারভেজকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে। পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তাকে নানাভাবে নির্যাতন ও ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, আমরা জিডি করতে গেলেও থানা তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ১৭ দিন পর ঝিনাইদহে একটি গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে পারভেজের মরদেহ শনাক্ত করি। পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও এতে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনার সাথে ঝিনাইদহের সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন (চাকুরিচ্যুত), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল, সাবেক ওসি হাসান হাফিজুর রহমান, এসআই কামরুল ইসলাম, আমিনুর রহমান, বোরহানুল ইসলাম, উজ্জল মৈত্র, মঞ্জুরুল ইসলাম, শাহরিয়ার হাসান, ডিএসবির সাবেক কনস্টেবল মুরাদ হোসেন, সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুসহ ২৪ জনকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন।
