ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আজ সকালে নির্দিষ্ট সময়ে অধিকাংশ কারখানা শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে কারখানায় উপস্থিত হওয়ার পরও কাজ না করায় ২১টি কারখানা ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই কারণে আগে থেকে বন্ধ রয়েছে ১৯টি তৈরি পোশাক কারখানা।

এদিকে গত কয়েক দিনে সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে, এজন্য মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় এসব তথ্য জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।

আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ ও তৈরি পোশাক কারখানার সংশ্লিষ্টরা জানান, বেতন ও হাজিরা বোনাস দেওয়া, টিফিন বিল বৃদ্ধি এবং শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ কিছু দাবিতে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আশুলিয়া ও গাজীপুর শিল্প এলাকায় কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ করছিলেন। কোথাও কোথাও আন্দোলন রুপ নিচ্ছিল সহিংসতায়। যার কারণে গতকাল সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ৯০টি কারখানা ছুটি ছিল। তবে এসময়ে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিজিএমইএ ভবনে বৈঠকে বসেন শ্রমিক-মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৈঠক শেষে বেশ কিছু দাবি মানার সিদ্ধান্ত জানিয়ে শিল্পাঞ্চলের সব কারখানা মঙ্গলবার খুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়।

বাংলাদেশ গামের্ন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন বলেন, গতকাল বিজিএমইএ বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত হওয়ার পর আজকে অধিকাংশ কারখানা সচল রয়েছে। কারণ বিজিএমইএ এর সিদ্ধান্ত যেটা হয়েছে শ্রমিকরা এর অনেক কিছুই মেনে নিয়েছেন। এখন থেকে নারী-পুরুষ বৈষম্য আর থাকবে না। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর কারণে শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। তবে কিছু কারখানা আগে থেকেই বন্ধ রয়েছে।

আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৪, সিপিসি-২–এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, পোশাক খাতে সৃষ্ট উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমরা গত কয়েক দিন ধরেই টানা কাজ করে যাচ্ছি। র‍্যাব-৪ এর মোট ১৩টি টহল গাড়ি এখানে রয়েছে। এছাড়া বিজিবি, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ কাজ করছে। আজকে আমরা বাইপাইল, ইপিজেড, আশুলিয়া, সাভার, জিরানীসহ পুরো এলাকায় যৌথ বাহিনী কাজ করছে। পরিস্থিতি আজকে অনেকটাই স্বাভাবিক। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, বেশিরভাগ কারখানাই খুলেছে। কাজ চলছে। আগের ১৯টি কারখানা বন্ধ ছিল। আর আজ ২১টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ করছে না। সবমিলিয়ে ৪০টি কারখানায় কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানে কোনো সহিংসতা বা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।