আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে ছুটি ৩০ কারখানা, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ২২টি

সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৪

পোশাক কারখানা। ছবি: সাভার প্রতিনিধি
ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে নানা সংকটের জেরে ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত সহিংসতা, বে-আইনী ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় ছুটি দেওয়া হয়।
এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২২টি কারখানা। এগুলো ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী কারখানা যতদিন বন্ধ থাকবে শ্রমিকরা ততদিনের মজুরি পাবেন না।
আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত কারখানাগুলোর সামনে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে বেশিরভাগ কারখানাই গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এ নোটিশ টানিয়ে দেয়।
শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আশুলিয়ার যেসকল কারখানা বন্ধ- অরুনিমা গ্রুপের ২টি প্রতিষ্ঠান অরুনিমা স্পোর্টস ওয়্যার, ডিএমসি এ্যাপারেলস, এনভয় গ্রুপের ৩টি প্রতিষ্ঠান মানতা এ্যাপারেলস, এনভয় ফ্যাশন্স, এনভয় ডিজাইন, ফ্লোরেন্স গ্রুপের সিগমা ফ্যাশন্স লি., শারমিন গ্রুপের ইশায়াত এ্যাপারেলস লি., হামীম গ্রুপের ৬টি প্রতিষ্ঠান দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার, এ্যাপারেলস গ্যালারী লি., রিফাত গার্মেন্টস, এক্সপ্রেস ওয়াশিং এন্ড ডাইং, আর্টিস্টিক ডিজাইন, নেক্সট কালেকশন্স, ডেকো গ্রুপ, এছাড়া ডেবোনেয়ার লি., ক্রসওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ, স্টারলিং স্টাইলস, বান্দো ডিজাইন, মন্ডল নিটওয়্যারস লি., এআর জিন্স প্রডিউসার, সাদ ফ্যাশন্সসহ প্রায় ২২টি কারখানা।
জামগড়া এলাকার এন আর এন নিটিং এন্ড গার্মেন্টস লি. গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে, একই ধারায় টঙ্গাবাড়ি এলাকার ওয়াশ এন্ড ওয়্যার লি. বন্ধ রয়েছে গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে।
মঙ্গলবার আশুলিয়ার বেশিরভাগ কারখানাতেই শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু দুপুরের দিকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার এনভয় কমপ্লেক্স, নরসিংহপুর এলাকার শারমিন ও হামীম গ্রুপে অসন্তোষ শুরু হলে কারখানা ছুটি দেয় কর্তৃপক্ষ।
অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বেশ কিছু কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, কয়দকদিন ধরেই বিজিএমইএর সাথে মিটিং করে আমরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছেন না। তাদের হাজিরা বোনাস বাড়ানো হয়েছে, টিফিন বিল বাড়ানো হয়েছে, তারপরও তারা কারখানায় গিয়ে কাজ না করে কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা থাকায় কারখানা মালিকরাও চাপে আছেন। এমতাবস্থায় দেয়ালে পিঠ লেগে যাওয়াতেই তারা ১৩(১) ধারায় ছুটি দিয়েছে। এতে কিন্তু শ্রমিকদেরই ক্ষতি, তারা কাজ না করলে বেতন পাবেন না।
ডিইপিজেডসহ আশুলিয়ার অন্যান্য কারখানাগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই কাজ চলছে বলে খবর মিলেছে। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আশুলিয়ার সড়ক মহাসড়কে শ্রমিকদের কোন বিক্ষোভ কিংবা আন্দোলনের খবর পাওয়া যায়নি।