কাজে না ফেরা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৭

আনসার ক্যাডার কর্মকর্তা ও রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যেসব পুলিশ সদস্য এখনো কাজে যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা ও ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে সকল পুলিশ সদস্য এখনো পর্যন্ত কাজে যোগদান করেননি, লুকিয়ে রয়েছেন, তাদের আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়া হবে। নিশ্চয়ই তারা কোনো অপকর্মে জড়িত, এ কারণে কাজে যোগদান করছে না।
তিনি বলেন, এখনো কাজে যোগ দেয়নি এমন পুলিশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আমরা তাদের ব্যাপারে তথ্য অনুসন্ধান করছি। আপনারাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আনসার বাহিনীর গৌরবদীপ্ত ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকার পতনে শহীদ সব ছাত্র-জনতাকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর বাংলাদেশ আজ নবজাগরণে উজ্জীবিত। বিগত সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের হতে পারেনি বলেই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার সরকার দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দিয়েছে আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ইয়ামিন ও ফাইয়াজদের মতো হাজারো ছাত্র-জনতা। আপনাদের (আনসার বাহিনী) নিকট আমার চাওয়া, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আপনারা নিজেদের সঁপে দিয়ে সততা, নিষ্ঠা ও ন্যায্যতার মাপকাঠিতে কাজ করবেন। আপনাদের সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যখন ট্রাফিক, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শূন্য হয়ে গিয়েছিল, তখন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানে এগিয়ে এসেছে। বিশেষ করে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিএমপির থানাগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীকে যে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। এর সুফল ভোগ করবে বাংলার জনগণ। সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছে, তাই তাদের একটা ক্ষমতার ভেতরে কাজ করতে হবে। আমাদের অন্যান্য বাহিনীরও কিছু স্বল্পতা রয়েছে, এটা পূরণ করার জন্য সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দরকার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এসময় তার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট, উপমহাপরিচালকরা, বাহিনীর পরিচালকেরাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।