নাটোরে ফের পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৫

পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। ছবি: নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে পদ্মায় দ্বিতীয় দফায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে নদীর চরাঞ্চলের প্রায় ৮০০ একর জমির আখ, মুলা, গাজর, বেগুন, কালাইসহ ৪৭৫ হেক্টর ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ঈশ্বরদী হার্ডিং ব্রিজ পয়েন্টে পানির লেভেল ১২ দশমিক ৩৮ মিটার। সে অনুযায়ী বর্তমানে লালপুরে পদ্মার পানি বিপদসীমার প্রায় দেড় মেটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল আলম চৌধুরী।
জানা যায়, গত তিন দিনে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের নওশারা সুলতানপুর, চাকলা বিনোদপুর, দিয়াড়শংকরপুর, আরাজি বাকনাই, রসুলপুর ও মোহরকয়া আংশিকসহ প্রায় ১৯টি চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বিলমাড়ীয়া গ্রামের মুনতাজ আলী ও শিমুল জানান, তার ৩ বিঘা জমিতে মুলা ও বেগুনের আবাদ তলিয়ে গেছে।
আরাজি বাকনাই চরের কৃষক আলাল আলী জানান, তার মুলা, গাজর ও বেগুনসহ প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা জমির ফসল ডুবে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, লালপুরে এবার ৪১০ হেক্টর আখ, ৪৫ হেক্টর শাকসবজি, ১০ হেক্টর কলা ও ১০ হেক্টর মাসকালাই বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে বন্যায় গো-খাদ্য সংকটে বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের খামারিরা। ইলশামারী চরের খামারি আরিফ মন্ডল জানান, বন্যায় গরু-মহিষ নিয়ে চরম দুর্ভোগে আছি। কোথাও কোন ঘাষ নেই। সব তলিয়ে গেছে।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য লাল মোহম্মদ ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী সালাউদ্দিন বলেন, গত তিন দিনে আকস্মিক বন্যায় আমার ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফসলি ক্ষেত। নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে প্রায় পাঁচশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে যাবে।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার হোড় জানান, নদীর পানি কমে যাওয়ায় কৃষকরা নতুন করে ফসল আবাদ করেছে। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এগুলো ডুবে গেছে। পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছি সার্বিক খোজখবর রাখার জন্য এবং কৃষি বিভাগ চর এলাকায় গেছে, ফসলের ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাণী সম্পদ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোন গবাদি পশুর খাদ্য বা চিকিৎসা প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নেওয়ার।