
নিহত মো. আব্দুস শহিদ। ছবি: নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী সদর উপজেলায় গণপিটুনিতে আহত এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আহত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে, ওই যুবককে রশি দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় বেধড়ক পেটানোর ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মো. আব্দুস শহিদ (৪৩) চর মটুয়া গ্রামের মমিন উল্যা মমিন উল্যাহ মুন্সির ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতি, অস্ত্র মামলাসহ আটটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে পূর্ব চর মটুয়া গ্রাম থেকে শহিদসহ চারজনকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাদের কাছ থেকে একটি শটগান উদ্ধার করেন। পরে তাদের গণপিটুনি দেন তারা। এতে তারা চারজনই গুরুতর আহত হন। শহিদ ছাড়া পিটুনির শিকার ব্যক্তিরা হলেন- মো. জামাল (৪৩), মো. জাবেদ (২৮) ও মো. রিয়াদ (২৮)।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ১৬ রেজিমেন্ট আর্টিলারি ক্যাপ্টেন ইফতেখার আহমেদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় ওই চার ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার এবং একটি শটগান জব্দ করা হয়। যৌথ বাহিনী আহত চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৭টার দিকে শহিদ মারা যান। অন্য তিনজন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে, নিহত যুবক মো. আব্দুস শহিদকে পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে জানানো হয়েছে, আব্দুস শহিদকে পিটিয়ে মেরেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। শহীদের মৃত্যুর আগে তাকে হাসপাতালে না নিয়ে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, বিএনপির লোকজন এ ঘটনায় জড়িত কথাটি সঠিক নয়। তিনি (আব্দুস শহীদ) অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাকে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোর্পদ করে।
পুলিশের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক তাদের পাওয়া যায়নি। তাই তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
সুধারাম মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, শহিদের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতি, অস্ত্র মামলাসহ আটটি মামলা রয়েছে। তিনি থানা–পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
তবে গণপিটুনিতে তার মৃত্যুর ঘটনায় এখনও থানায় কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।