ভারী বর্ষায় যশোরে ৮৮৮ হেক্টর জমির ফসলহানি, ক্ষতির পরিমাণ ২৬ কোটি টাকা

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৫
জলাবদ্ধতায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি। ছবি: বেনাপোল প্রতিনিধি
ভারী বর্ষার কারণে যশোরে ৮৮৮ হেক্টর জমির ৬ হাজার ৭৭৪ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন ফসলহানি হয়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, পেঁয়াজ, বিভিন্ন রকমের সবজি, কলা ও পান। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১১৫ কৃষক। গত ১৬ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হওয়া ভারী বর্ষায় ফসলের এই ক্ষয়-ক্ষতি হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার ক্ষয়-ক্ষতির এ তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দুই মাস আগে ধান রোপণ করা হয়। সবজি ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনের মাঝামাঝি পর্যায়ে ছিল। জেলায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪৬ হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে রোপা আমন, সবজি, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও পান চাষ করেন কৃষকরা। গত ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হওয়া ভারী বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে ৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৮৮৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সূত্র মতে, ৫ হাজার ১৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫ হাজার হেক্টর। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৫০ হেক্টর জমির ধান। ৫০০ হেক্টর ফসলি জমি আংশিক থেকে ক্ষতি সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তর হয়। সবমিলিয়ে ক্ষতি হয় ৬৫০ হেক্টর জমির ধান। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৫ হাজার ২৪০ জন।
মরিচের ৪০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতি হয় ২০ হেক্টর ও সম্পূর্ণ ক্ষতি হয় ২০ হেক্টর জমির মরিচ। আংশিক ক্ষতি থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তর হয় ৬ হেক্টর জমির মরিচ। এতে ২৬ হেক্টর জমির মরিচ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৩৯০ জন।
এদিকে, ক্ষতির কবলে পড়ে ৪৫০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতি হয় ৪০০ হেক্টর জমি। সম্পূর্ণ ক্ষতি হয় ৫০ হেক্টর জমির সবজি। আংশিক ক্ষতি থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তর হয় ১৪০ হেক্টর। এতে মোট ক্ষতি পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯০ হেক্টর জমির সবজি চাষ। ক্ষতিগ্রস্ত হন ২ হাজার ২৮০ জন কৃষক।
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ৩০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতি হয় ১৮ হেক্টর। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১২ হেক্টর জমির পেঁয়াজ। আংশিক ক্ষতি থেকে সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তর হয় ৬ হেক্টর। মোট ক্ষতি হয় ১৮ হেক্টর জমির পেঁয়াজ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৪৫ কৃষক।
পানের ৪০ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এর মধ্যে আংশিক ক্ষতি হয় ৪০ হেক্টর জমির পান। ২ হেক্টর জমির পান চাষ আংশিক ক্ষতি সম্পূর্ণ ক্ষতিতে রূপান্তরিত হয়। এতে মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ হেক্টর জমির পান চাষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৫ কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১০ হাজার সবজি চাষিকে বীজ, নগদ ১ হাজার টাকা ও ২০ কেজি করে সার দেয়া হয়েছে।