Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

পদত্যাগ করেছেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০৬

পদত্যাগ করেছেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।

ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম।

আজ রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি। তার পদত্যাগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।

এদিকে পরিচালকের স্বাক্ষর করা পদত্যাগপত্রে লেখা রয়েছে, ‘আমি ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম পরিচালক হিসেবে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালনায় অপারগ হওয়া স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে অত্র হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বিরত রয়েছি।

এর আগে রবিবার সকাল ১০ টায় হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে ১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে যুক্ত হন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন। তিনি ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে শান্তি সমাবেশ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন পরিচালক। সর্বশেষ এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তিনি। আমরা মনে করি এই পক্ষপাতমূলক আচরণ নিয়ে তার এখানে দায়িত্ব পালনের দরকার নেই। এজন্য পরিচালকের পদত্যাগ দাবি নিয়ে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি পদ থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

এ প্রসঙ্গে ডা. এইসএম সাইফুল ইসলাম জানান, বরিশালের সন্তান আমি। বরিশালের প্রতি, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার আবেগ আছে, ভালোবাসা আছে। তবে এখন থেকে পরিচালকের পদে আমি আর থাকবো না। পদত্যাগের বিষয়ে বাকিটা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানান পরিচালক।

এদিকে পরিচালকের পদত্যাগের পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরেছেন যান। তবে তাদের দাবি একজন যোগ্য ব্যক্তিকে হাসপাতালের দায়িত্ব দেওয়া হোক। পাশাপাশি তাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে আবারো আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, পরিচালকের হাসপাতাল থেকে মৌখিক ও লিখিত পদত্যাগপত্র হাতে পেয়েছি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানোর কথা জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড মো. জুনায়েদ (৮), নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুটি নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হন। শিশু জুনায়েদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার স্বজন সাথী আক্তার চিকিৎসক ও নার্সদের লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় পরিচালকের কাছে চারদফা দাবি তুলে ধরেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। দাবিগুলো হল- দোষীদের গ্রেপ্তার, হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি ও কমপক্ষে ৩০ জন পুলিশ সদস্য রাখা, শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি বন্ধ করা ও একজন রোগীর সাথে একজন স্বজন রাখা, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।

এসব দাবির প্রেক্ষিতে হাসপাতালের পরিচালককে দেয়া ২৪ ঘণ্টা আল্টিমেটাম শেষে রবিবার সকাল ১০ টায় ডক্টরর্স এ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) মানববন্ধন করে৷ এসময়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগের সকল চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পরে রোগী ও তাদের স্বজনরা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫