যশোরে ৫ বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতন, পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:১৬

গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: বেনাপোল প্রতিনিধি
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় পাঁচ বছর বয়সী মেয়েশিশুকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার ঘটনার দায় স্বীকার করে তিন আসামি আদালতে জবাববন্দি দিয়েছেন।
গতকাল রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই তিন আসামি জবানবন্দি দেন। এর আগে সকালে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গত ২০ জুলাই বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নে বাড়ির পাশে খেলার সময় নিখোঁজ হয় ওই শিশু। পরদিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এর প্রায় দুই মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থানায় আসে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, যৌন নির্যাতনের (সেক্সুয়াল অ্যাসাল্ট) পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটির বাবা যশোরের বাঘারপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রোকিবুজ্জামান জানিয়েছিলেন, নিহত শিশুটির ঠোঁটে ছোট একটি দাগ ছিল। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার সময় দাগটি পুলিশের নজরে আসে। দাগটি দেখে সন্দেহ হয়। এ কারণে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শিশুটিকে ধর্ষণের পর গলা, নাক ও মুখ চেপে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যার দিকে পিবিআই যশোর কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিদর্শক মীর রেজাউল হোসেনের নেতৃত্বে পিবিআই যশোরের একটি দল রবিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলার গ্রামের বাড়ি থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- ইশিতা আক্তার (১৯), তার বাবা তহিদুর রহমান (৫৫) ও মা নিরু বেগম (৪২)। তিনজনই আজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পিবিআই বলছে, ইশিকা আক্তার নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। হত্যার পর ইশিকার মা–বাবা লাশ লুকিয়ে রাখতে সহায়তা করেন।
যশোরের পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমীন বলেন, এ ঘটনায় সেপ্টেম্বরে মামলা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। এরপর এসআই স্নেহাশীষের নেতৃত্বে একটি টিম দফায় দফায় ওই এলাকায় যায়। প্রথমে ইশিকার বাবা ঘটনাটি স্বীকার করেন। এরপর বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক তথ্য।
তিনি আরও বলেন, আদালতে তিন আসামি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।