Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের করুণ দশা

Icon

তাহজীবুল আনাম

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৪০

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের করুণ দশা

সৈকতের নানাস্থানে প্লাস্টিকের বর্জ্যসহ বিভিন্ন আবর্জনা ও দুর্গন্ধে ভরপুর। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের অন্তত ৬ কিলোমিটার এলাকায় বালিয়াড়িতে তীব্র ভাঙন ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সৈকতের চারপাশে কোনো না কোনো ভাঙন হচ্ছেই। এতে দিনদিন জৌলুস হারিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্রসৈকত। 

সরেজমিনে দেখা যায় সমুদ্রসৈকতের কলাতলী বিচ পয়েন্টে নামার আগে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পাশে বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গেল কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কের পাশের বালিয়াড়ি ক্ষয় হয়ে যায়। এতে পর্যটকদের চলাচলে যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি শ্রী হীন হয়ে পড়েছে ওই স্থানটি।

কলাতলী পয়েন্ট ছাড়াও সুগন্ধা, লাবণী পয়েন্ট ও কবিতা চত্বরসহ এসব এলাকার অন্তত ১৫টি স্থানে ছোট-বড় ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্র জোয়ার এবং বন্যার পানিতে বালুচর ও সৈকতের পাড় ভেঙে এই ভাঙন সৃষ্টি হয়। এতে পর্যটকদের হাঁটা-চলা করতে সমস্যা হচ্ছে। বেশি সময় ধরে কক্সবাজারে ভারী বর্ষণ হলে বৃষ্টির পানিতে কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোন ডুবে যায়। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি সরাসরি সমুদ্রসৈকতে এসে পড়ে। এর ফলে বালুচর ক্ষয় হয়ে ভাঙন দেখা দেয়। 

স্থানীয়রা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে সৈকতের বালিয়াড়ি ভেঙে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় নিচু এলাকা দিয়ে পানি নামার কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রসৈকত ভাঙলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। 

জানা যায়, সৈকতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ঢলের পানিতে বালিয়াড়ি বিলীন হচ্ছে। বালুচরে সৃজিত সাগরলতাও হারিয়ে যাচ্ছে।

২০২২ সালে লাবণী পয়েন্টে যখন ভাঙন শুরু হয় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ৬৮ লাখ টাকা খরচ করে এক কিলোমিটার জিও টিউব ব্যাগ বাঁধ নির্মাণ করেছিল। তাতে ভাঙন কিছুটা রোধ হলেও সৈকতের সুগন্ধা, কলাতলীসহ নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। সাগরে বালিয়াড়ি বিলীন হওয়ায় গত দুই বছরে কয়েক হাজার ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে। কয়েকটি হোটেল ও শতাধিক দোকানপাট বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

পর্যটন ব্যবসায়ী মুকিম খান জানান, অনেক আগে থেকে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। এখন যে সৌন্দর্য বাকি আছে সেটিও বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। সৈকতের ভাঙনরোধ করা না গেলে দ্রুতই বিলুপ্ত হবে বালিয়াড়ি। এ অবস্থায় কক্সবাজার বিমুখ হবেন পর্যটকরা।

সৈকতের নানা স্থানে ভাঙনের কারণে ঠিকমতো হাঁটা-চলা করতে পারে না পর্যটকরা। সমুদ্রসৈকতে এ অবস্থার জন্য পর্যটকরা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটক সমির শাহা বলেন, সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। সৈকত দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়ায় হাঁটার পরিবেশ নেই। এ ছাড়া সৈকতে ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর। গত ১০ বছরে এমন পরিবেশ আর দেখা যায়নি। 

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কক্সবাজার শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন বলেন, বৈরী পরিবেশে সাগর উত্তাল, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৈকতের বিভিন্ন স্থানে বালিয়াড়ি বিলীন হচ্ছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫