কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ময়মনসিংহে নতুন করে প্লাবিত ২৫ গ্রাম

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:১২

ধোবাউড়ার আইলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকটি ঘরে মঙ্গলবার সকালে পানি উঠেছে। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হওয়ায় কংস ও নেতাই নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। নতুন করে তিন উপজেলায় অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। টানা পাঁচদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের জন্য তিন উপজেলায় সাত লাখ টাকা ও ৬৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। বৃষ্টি না হলে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারী শিশুসহ কয়েক শতাধিক মানুষ উঠেছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সানোয়ার হোসেন জানান, কংস নদীর পাড়ে ধোবাউড়ার আইলাতলী আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকটি ঘরে মঙ্গলবার সকালে পানি উঠে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে বাসিন্দাদের।
আমেনা বেগম নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক বাসিন্দা বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ঘরের চারপাশে পানি। পোলাপান নিয়ে পানির মধ্যে খুব কষ্টে আছি। গতকাল শুধু একটি সংগঠন আমাদের বিরিয়ানি দিয়েছে। প্রশাসন থেকে কেউ কোনো খোঁজখবর নেয়নি।
আরেক বাসিন্দা মিনতি রানী পাল বলেন, বন্যায় পুজার আনন্দ ম্লান হয়েছে। দুই বেলা খাবারই কপালে জুটছে না। তাহলে পুজা কীভাবে করব? সরকার সহযোগিতা করলে অন্তত সন্তানসন্ততি নিয়ে চলতে পারতাম।
ধোবাউড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, পঞ্চমদিনে সকালের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় পানি কিছুটা বেড়েছে। নতুন কয়েকটি এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। আমরা বানভাসি মানুষকে শুকনো খাবারের পাশাপাশি ওষুধ সরবরাহ করছি। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, সকালের কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতে নতুন করে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নসহ চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে নতুন করে আক্রান্ত ১৬টি গ্রাম। বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
হালুয়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদুল আহমেদ বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে হালুয়াঘাটে বন্যার সৃষ্টি হয়। উজানের পানি কমে এখন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এই এলাকায় ১৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামগ্রিক সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।