Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

ময়মনসিংহে বন্যার উন্নতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার

Icon

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৫৫

ময়মনসিংহে বন্যার উন্নতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার

ময়মনসিংহের বন্যাদুর্গত এলাকা। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া এবং ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) ভোর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, বৃষ্টি না হলে পানি নামতে আরো দুই একদিন সময় লাগবে। বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী না পৌঁছানোরও অভিযোগ অনেকের। 

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় ভোর থেকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। বাড়ি ঘরের পানি ইতোমধ্যে নামতে শুরু করেছে। তবে বৃষ্টি না হলে দুই একদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে। 

তিন উপজেলায় সাত লাখ টাকা ও ৬৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

বন্যায় ফুলপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয় ২৪ হাজার মানুষ। বুধবার সকালে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের ভাটপাড় ও সিংহেশ্বর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে নিচের দিকে যাচ্ছে।

ভাটপাড় গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন, বাড়ির উঠানে এখনো কোমর পানি। তাই ছাগলটিকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছি। আজকে সকাল থেকে পানি কমছে, তবে বৃষ্টি না হলে আরো দুই একদিন লাগবে পানি নামতে। কয়েটাদিন দুর্ভোগে থাকলেও কেউ কোন সহযোগিতা করেনি।

একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৩ সালের পর এবারের বন্যা সবচেয়ে বড় হয়েছে। আমার ৯০ কাঠা জমির ধান তলিয়ে আছে পানিতে। কোন উপায় খোঁজে পাচ্ছি না। আমার মত হাজার হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত সরকার সহযোগিতা না করলে ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল হবে। বিএনপি নেতাকর্মীরা ত্রাণ সহায়তা করলেও প্রশাসনের কেউ আসেনি।


সিংহেশ্বর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নয়ছুদ্দিন আকন্দ বলেন, মানুষের স্বপ্ন পানিতে ভেসে গেছে, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগ আরো বাড়বে। এরশাদের সময়ে বাংলাদেশ বন্যা হয়েছিল তখন ব্রিটেনের রাজারানি এসেছিলেন সহায়তা নিয়ে। এখন আর এমনটি হয় না। আমরা চাই অন্তত আমাদের সরকার সহযোগিতা করুক।

হালুয়াঘাট উপজেলার আমতৈল গ্রামের হাসিনা বানু বলেন, মানুষের বাসায় কাজ করে আমার দিন চলত। বন্যার কারণে এখন কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুই বেলা ঠিক মত খেতেও পারছি না। কোন ধরনের সহযোগিতাও পাচ্ছি না। ত্রাণসামগ্রী আমাদের খুব প্রয়োজন।

ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল থেকে ফুলপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। মানুষের বাড়ি-ঘরের পানি নামতে শুরু করেছে। আশা রাখছি বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি নেমে যাবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিন বলেন, আজকে নতুন করে কোন গ্রাম প্লাবিত হয়নি। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে পানি কমে যাবে। আমাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার, ওষুধ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে হালুয়াঘাটে বন্যার সৃষ্টি হয়। উজানের পানি কমে এখন নিম্নাঞ্চলে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমতে শুরু করায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসতে শুরু করেছে। হালুয়াঘাটে ১৮ হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাময়িকভাবে তাদের সহযোগিতা করার পাশাপাশি ক্ষতি নিরূপণ করে সামগ্রিক সহযোগিতা করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫