মুন্সীগঞ্জে যুবতীকে জোরপূর্বক গর্ভপাতের চেষ্টা ও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:০৮

মুন্সীগঞ্জ জেলার মানচিত্র। ফাইল ছবি
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে স্ত্রী পরিচয়ে দিপা বেগম (৩০) নামের এক নারীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর চেষ্টা ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে পশ্চিম সিংপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে সার ব্যবসায়ী রিপন শেখ ৪ দিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকার মিরপুর থেকে দিপা বেগমকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরকিয়া প্রেমের সূত্র ধরে দিপা ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় রিপনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে দিপার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রিপন গর্ভপাত করানোর জন্য ঢাকা থেকে ৪ জনের একটি টিম আনেন। তারা এসে জোরপূর্বক দিপাকে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করেন। এসময় দিপা চিৎকার করলে তাকে রিপনসহ বাড়ির লোকজন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন। পরে আশপাশের লোকজন এসে রক্তাক্ত অবস্থায় দিপাকে উদ্ধার করেন এবং গর্ভপাত করাতে আসা টিমের আম্বিয়া নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দিপাকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় এবং আম্বিয়াকে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ আসার আগেই অভিযুক্ত রিপন পালিয়ে যান।
রিপনের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার স্বামী রিপন দিপাকে ঘরে আটক করে অজ্ঞাত ২ নারীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক ইনজেকশন পুশ করেন এবং হাতুরি দিয়ে পায়ের হাটুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে গর্ভপাত করাতে আসা ২ নারী ও রিপন পালিয়ে যান।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কাশফি জানান, নির্যাতনের কারণে দিপা স্বাভাবিকভাবে কাথা বলতে পারছেন না। তার হাত পায়ের হাড় ভাঙা। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।
শ্রীনগর থানার ওসি মো. ইয়াসিন মুন্সী জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আটক নারী থানায় আছে। এ বিষয় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।