
লাউ চাষ। ছবি: লালমনিরহাট প্রতিনিধি
মৎস্য চাষি কৃষক মেহেদী হাসান মধু। তিনি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শ্রুতিধর গ্রামের ওসমান গনির ছেলে। মাস্টার্স শেষ করেছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি কৃষিকাজ করতেন। এই সময়ই ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি মৎস্য প্রজেক্টে পানির ওপর ভেলা তৈরি করে ভাসমান লাউ ও সবজি চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। শিক্ষিত কৃষক মেহেদী হাসান মাছ চাষ ও ভাসমান লাউ চাষ করে নিজের ভাগ্য বদল করেছেন। ব্যতিক্রমী এই চাষাবাদে তিনি এখন আরও বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।
কৃষক মো. মেহেদী হাসান মধু পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে ৭০ শতাংশ জমিতে প্রথমে মাছের ঘের তৈরি করে আধুনিক পন্থায় শুরু করেন মাছ চাষ। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে মৎস্য প্রজেক্টের চারপাশে বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি চাষ ও পানির ওপর মাচাঙ তৈরি করে থাই জাতের লাউ চাষ শুরু করেন। তার এই ভাসমান লাউ চাষ দেখতে এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ছুটে আসেন।
নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত ৭০ শতাংশ জমির পুকুরে মাছ চাষ ও পানির ওপর উঁচু করে লাউ চাষ করতে মেহেদী ব্যয় করেছেন পঁচিশ হাজার টাকা। এখন প্রতি সপ্তাহে ১০০ থেকে ১৫০ পিস লাউ বিক্রি করছেন তিনি। যার বর্তমান পাইকারি মূল্য প্রতিপিস আকার ভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচা বাজারের পাইকাররা তার বাড়িতে এসে লাউ ও অন্যান্য সবজি সংগ্রহ করছেন।
প্রথমে মৎস্য চাষ, পরে পুকুরের মাঝে সবজি চাষ ও পানির ওপর মাচা বা ভেলা তৈরি করে লাউ চাষ- বাম্পার ফলন পাওয়ায় মেগেদী হাসান দারুণ খুশি। তাকে দেখে এলাকার আরও অনেকেই পুকুরে লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কৃষক মেহেদী হাসান মধু বলেন, মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুরের পানির ওপরে মাটি উঁচু করে লাউ চাষ প্রথম ইউটিউবে দেখে আমি নিজে শুরু করি। প্রতি সপ্তাহে এখন চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারছি। এ বিষয়ে ভোটমারী ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী
কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, পুকুরের মাঝে মাটি উঁচু করে লাউ ও সবজি চাষ এই জেলায় প্রথম। পানির ওপর লাউ সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকও স্বাবলম্বী হচ্ছে। আমরা কৃষকদের প্রতিনিয়ত আধুনিক পদ্ধতিতে একই জমিতে একাধিক ফসল চাষ করার জন্য আমরা প্রান্তিক
কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইফুল আরিফিন বলেন, ‘জেলায় ভাসমান কোনো প্রকল্প নেই। তবে কেউ যদি নিজ উদ্যোগে বদ্ধ জলাশয়ের ওপর প্রকল্পটি করেন তা হলে লাভবান হবেন। এজন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে।’