বাগেরহাটে প্রজনন খামারে ১৮ মহিষের রহস্যজনক মৃত্যু

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৫৫

মহিষের রহস্যজনক। ছবি: বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের ফকিরহাটে অবস্থিত দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে ১৮টি মহিষের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খামারের মাঠ ও শেডে এই মহিষগুলোর মৃত্যু হয়। কেন্দ্র আরও দুইটি মহিষ মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে।
মহিষ প্রজনন খামারের কর্মী আক্তার হোসেন বলেন, সকাল ৬টায় প্রজনন কেন্দ্রের শেড থেকে মহিষগুলোকে বাইরে বের করা হয়। ১০টার দিকে হঠাৎ দেখতে পাই কিছু মহিষ মাঠের মধ্যে ছটফট করছে। সাথে সাথেই কিছু মহিষ মারা যায়। দ্রুত বাকি মহিষগুলোকে শেডে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এক সঙ্গে এত মহিষের মৃত্যুর কারণ জানতে বাগেরহাট জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনোহর চন্দ্র মন্ডলের নেতৃত্বে কয়েকটি মহিষের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মহিষগুলোর প্রয়োজনীয় অঙ্গ পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানান ডা. মনোহর চন্দ্র মন্ডল।
তিনি বলেন, মহিষের মৃত্যুর খবর পেয়ে দ্রুত প্রজনন খামারে ছুটে আসি। এসে দেখতে পাই বেশ কিছু মহিষ মারা গেছে। মহিষগুলোর বিভিন্ন অর্গান স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। দুইটি মহিষ এখনো অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ আমরা এখনো জানতে পারিনি। অর্গান স্যাম্পল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এদিকে মহিষের মৃত্যুর খবর শুনে দুপুরের পরে স্থাণীয় বাসিন্দারা খামারের অভ্যন্তরে জড়ো হয়। তারা বলতে থাকেন, যেখানে মহিষগুলো খাবার খাচ্ছিল তার পাশেই পুকুর পাড়ে মাছের জন্য রাখা খাবার খেয়ে এই মহিষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া খামার কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেও দায়ী করেন তারা।
স্থানীয় রাজু নামের এক ব্যক্তি বলেন, খামারের ভেতরে যে পুকুর রয়েছে ওই পুকুরে খামারের কিছু কর্মচারীরা মাছ চাষ করেন। ওই মাছের জন্য রাখা পঁচা খাবার খেয়ে এই মহিষগুলো মারা গেছে। আর দীর্ঘদিন ধরে এখানের যারা দায়িত্বে আছেন, তারা তাদের ইচ্ছে মত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। যার কারণে পঁচা খাবার খেয়ে মাঝে মাঝেই মহিষ অসুস্থ্য হয়।
মহিষের মৃত্যুর বিষয়ে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আহসান হাবীব বলেন, মহিষগুলোকে শেড থেকে মাঠে নেওয়ার পর কিছু মহিষ রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত ১৮ টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে, ২টি মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
খবর শুনে খামার পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. সাহেব আলী।
১৯৮৪-৮৫ অর্থ বছরে ফকিরহাটের শুকদারা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মহিষ খামারে বর্তমানে ৪৩৭টি মহিষ রয়েছে।