Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

রঘুনাথপুরে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে বাম্পার ফলন

Icon

দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪

রঘুনাথপুরে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে বাম্পার ফলন

মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষ। ছবি: গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের উত্তম বিশ্বাস মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে সবজির বাম্পার ফলন পেয়েছেন। ২০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করে তিনি বাজিমাত করেছেন। মালচিং বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি বিশেষ পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে গাছপালার গোড়া বা সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষভাবে ঢেকে দেওয়াকে মালচ বলে।  আর এই পদ্ধতিতে চাষের প্রক্রিয়াই হচ্ছে মালচিং পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ফসলের আর্দ্রতা সংরক্ষণে বিশেষভাবে উপকারী। 

উত্তম বিশ্বাস ক্ষেতে ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার গুটি করে প্রয়োগ করেন। নিয়মিত পরিচর্যা করে ক্ষেত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। আবাদের ৬৫ দিনের মাথায় তিনি ক্ষেত থেকে  বেগুন তোলা শুরু করেন। এখন ক্ষেতে বেগুন চাষের  বয়স ৮৩ দিন। এ পর্যন্ত তিনি এক হাজার কেজি বেগুন বিক্রি করেছেন। শুরুতে প্রতি কেজি বেগুন ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। সেই হিসাবে এক লাখ ৪০ হাজার টাকার বেগুন তিনি বিক্রি করেছেন। এখনো ক্ষেতে এক লাখ টাকা বিক্রি করার মতো বেগুন আছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করে বিক্রি করতে পারবেন। আশা করা হচ্ছে এই ক্ষেত থেকে তিনি অন্তত তিন লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করবেন। মাত্র ৩৮ হাজার টাকা খরচ করে উত্তম বিশ্বাস ২০ শতাংশ জমিতে বেগুনের চাষ করেন।

কৃষক উত্তম বিশ্বাস বলেন, “কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রঘুনাথপুর ইউনিয়নের দীঘারকুল ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদারের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করেছি। এ কারণে অতিবৃষ্টিতেও গাছের গোড়ায় পানি জমেনি। গাছ মারা যায়নি। গাছের গোড়া থেকে ৮-৯ ইঞ্চি দূরে ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার গুটি করে প্রয়োগ করেছি। ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখেছি। তাই বেগুনে ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ খুব কম হয়েছে। এতে করে বেগুনের বাম্পার ফলন পেয়েছি। বাজারে  ভালো দাম পাচ্ছি। এ সময় অন্য ফসলের চাষাবাদ করলে এত টাকা ঘরে তুলতে পারতাম না। আমার দেখাদেখি অনেকেই আগামী দিনে এ পদ্ধতিতে সবজি আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, ‘কৃষক উত্তম আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া নিয়মিত আমি তার ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। তিনি ওই ক্ষেতে ভাগুর ও বিকাশ জাতের বেগুন আবাদ করে সাফল্য পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমে সবজির আবাদ করা হলে বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব।’

উত্তমের এই আবাদ পদ্ধতি দেশের কৃষিতে অনেক আগেই উদ্ভাবিত হয়েছে। কিন্তু রঘুনাথপুর ইউনিয়নের এ ব্লকে এ বছরই প্রথম মালচিং পদ্ধতির আবাদ হয়েছে। উত্তমের চাষাবাদ দেখে অনেক কৃষক এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদে আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ পদ্ধতি সম্প্রসারণ করতে পারলে বর্ষা মৌসুমে সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অধিক দামে সবজি বিক্রি করে কৃষক লাভবান হবেন। রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক অমল মন্ডল বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আমাদের কিছু জমি পতিত থাকে। সেখানে এ পদ্ধতিতে সবজির চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া যায়। এমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উত্তম। আগামী দিনে এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করব।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, ‘নতুন চাষ পদ্ধতি সম্প্রারণ করে আমরা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই। সেই সঙ্গে কৃষকের আয় আমরা বাড়িয়ে দিতে কাজ করছি।’

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫