
ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ছেলের আর্তনাদ। ছবি: লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে হিরা লাল দেবনাথ (৫৫) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় নিহতের ছেলে চিৎকার করলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে বাজারের কাপড়ের দোকানের ব্যবসায়ী যতন দেবনাথ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করছেন নিহতের ছেলে প্রীতম দেবনাথ।
গতকাল শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের কাজির দিঘিরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর মেজর জিয়া উদ্দিন আহমেদ, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার ও বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা সদর হাসপাতালে আসেন।
নিহত হিরা লাল দেবনাথ হামছাদী এলাকার গোবিন্দ ডাক্তার বাড়ির প্রফুল্ল দেবনাথের ছেলে ও কাজির দিঘীরপাড় এলাকার মাতৃ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী।
নিহত হিরার ছেলে প্রিতম দেবনাথ বলেন, কাজির দিঘিরপাড় বাজারে দোকান বন্ধ করে দুইটি আলাদা বাইসাইকেলযোগে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। এরমধ্যে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন লোক দ্রুত গতিতে তাদের বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়ায়। ঘটনাটি স্বাভাবিক ভেবে তিনি বাড়ির দিকে সাইকেল চালিয়ে এগিয়ে যান। তখনও তার বাবা পেছন দিয়ে সাইকেল চালিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা তার বাবার সাইকেল গতিরোধ করে ছুরি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করে। পরে তিনি চিৎকার করলে ওই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সহায়তায় তার বাবাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রিতম আরো জানান, তাদের দোকানের সামনে প্রায়ই পার্শ্ববর্তী দোকানের ব্যবসায়ী যতন দেবনাথরা কাপড় ঝুলিয়ে রাখেন। এতে দোকানের সামনে অন্ধকার থাকে। এ নিয়ে প্রায় কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে রাতের অন্ধকারে তার বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে যতন দেবনাথ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। এদিকে ঘটনার পর থেকে যতন দেবনাথ পলাতক রয়েছেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি সমির কর্মকার হত্যাকারীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত হত্যাকারীদেরকে চিহ্নিত করতে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কমলা শীষ রায় বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যক্তি মারা গেছেন। তার শরীরের দুইটি অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানান এই চিকিৎসক।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মুন্নাফ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে পুলিশ।