
উদ্ধার হওয়া ১৯ জেলে। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের হাতে অপহরণের পাঁচদিন পর ১৯ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকালে তাদের উদ্ধার করা হয়।
গত ৬ নভেম্বর রাত ২টার দিকে মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমে সাগরে ২১ মাঝি মাল্লাসহ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল আল্লাহর দয়া-৩ নামের একটি ফিশিং বোট। এসময় জলদস্যুদের গুলিতে বোটের মাঝি মোকাররম নিহত হয়। জলদস্যুরা গুলিবিদ্ধ মোকাররমকে আরেকটি বোটে তুলে দিয়ে ১৯ জেলেসহ ফিশিং-বোট অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পাঁচ দিন পর গতকাল শনিবার গভীর রাতে জলদস্যুরা ফিশিং-বোটের ইঞ্জিন নষ্ট করে জেলেসহ ছেড়ে দেয় সাগরে। ১৯ জেলে বিকল বোট নিয়ে ভাসতে দেখে অপর একটি ফিশিং-বোট উদ্ধার করে তাদের।
বোটের মালিক বাশঁখালীর ইসমাইল ও ১৯ জেলেসহ বিকল ফিশিং-বোটটি রবিবার বিকাল ৩টার দিকে উত্তর ধুরুং আকবরবলী ঘাটে ভিড়ে।
এ সময় জেলে পরিবারের স্বজনসহ এলাকাবাসী ভিড় জমায়। ১৯ জেলের মধ্যে ১৬ জন উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের বাসিন্দা। ২ জন দক্ষিন ধুরুং ও ১ জন নোয়াখালী জেলার।
সাগর থেকে ফিরে আসা অপহৃত মাঝি-মাল্লারা হলেন, গিয়াস উদ্দিন (ফইজ্জার পাড়া),শাহ আলম,(জমির বাপের পাড়া), রুহুল আমিন (জমির বাপের পাড়া), নাছির উদ্দিন (চাটি পাড়া), শাহজাহান (চাটি পাড়া), মো: সাহেদ (ফরিজ্জার পাড়া), তৌহিদুল ইসলাম (চাটি পাড়া), মো: আব্বাছ (চাটি পাড়া), মো: কালু (দক্ষিন ধুরুং), সোনা মিয়া ( ফয়জানির পাড়া), মো: রেজাউল (ফরিজ্জার পাড়া), মো: মেহেদী (ফরিজ্জার পাড়া), মো: সাকিব (ফরিজ্জার পাড়া), মো: ইদ্রিস (ফরিজ্জার পাড়া), মো: নয়ন ( ফরিজ্জার পাড়া), মো: সাগর (কুইল্যার পাড়া), মনছুর আলম (আজিম উদ্দিন সিকদার পাড়া), ইঞ্জিন ড্রাইভার শাহজাহান( লক্ষীপুর) ও মো: রুবেল (মশরফ আলী বলির পাড়া,দ: ধুরুং)।
ফিরে আসা জেলেরা বলছেন, আবার আমরা ফিরে আসতে পারবো কল্পনা করিনি। মনে করেছিলাম সাগরেই মরে মাছের খাবারে পরিনত হব। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, জেলেদের বোটের ইঞ্জিন বিকল করে তাদের সাগরে ছেড়ে দিলে তারা ভাসতে থাকে। ভোরে খবর পেয়ে তাদের উদ্ধারে প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে রোববার বিকালে কুতুবদিয়া পৌছে ১৯ জেলে।
তারা পাঁচ দিন সাগরে অনাহারে ছিল। ফলে যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন তাদের সঠিক চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে পরিবারে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।