বরিশাল থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরকাঠি এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত আলো মজুমদার পটুয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক অনুপ রায়ের স্ত্রী। তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। তারা নগরীর কাশীপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।

তাছাড়া বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নরকাঠি গ্রামের কৃষ্ণকান্ত মজুমদারের মেয়ে আলো দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলে দাবি করেছেন তার স্বজন রমেন মজুমদার ও স্বামী অণুপ রায়।

নিহতের স্বজন রমেন জানিয়েছেন, সোমবার সকালে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতে বাসা থেকে বের হন আলো। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান মিলছিল না।

মঙ্গলবার সকালে কীর্তনখোলা নদীর চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরকাঠি এলাকায় আলোর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে নৌপুলিশ লাশ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে গিয়ে আলোর মৃতদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।

পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী অনুপ রায় দাবি করেন, মানসিক ভারসম্যহীন ছিলেন আলো। এজন্য তার চিকিৎসাও চলছিল। চাকরির জন্য পটুয়াখালীতে অবস্থান করতেন তিনি। আর সন্তানদের নিয়ে বরিশাল নগরীর কাশিপুরের ভাড়া বাসায় থাকতেন আলো।

সোমবার সকালে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীর বাসাবাড়িতে খোঁজ করা হলেও তার সন্ধান মেলেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার ছবি দিয়ে সন্ধান চাওয়া হয়। তাতেও কোনো খবর আসেনি।

তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে খবর পান এক নারীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। দেখতে গিয়ে শনাক্ত করেন ওই লাশ তার স্ত্রীর। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন, সোমবার রাতে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী চলন্ত সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেন আলো।

আলোর ভাই মঞ্জু মজুমদার জানান, তার বোন মানসিক ভারসাম্যহীন। এজন্য তার চিকিৎসাও চলছে। মাঝেমধ্যে এভাবে তিনি বের হয়ে আবার বাসায় ফিরে আসতেন। কিন্তু সোমবার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।

সুন্দরবন লঞ্চের ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, সোমবার সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ থেকে এক যাত্রীর ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা শুনেছি। পরে যাত্রীরা ডাকাডাকি করলে লঞ্চ থামিয়ে সার্চলাইট দিয়ে তার খোঁজ করেন স্টাফরা। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরও কোনো সন্ধান না পেয়ে লঞ্চ গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মঙ্গলবার খবর পাই সেই যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, নৌপুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।