১১ বছর পর সাবেক এমপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:১২

সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। ছবি: চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত বালি ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার দায়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর ও সাবেক চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বিল্লালের বোন শালপোনা পারভীন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। দর্শনা আমলী আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিপন আলী বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে মামলাটি চুয়াডাঙ্গা সিআইডিতে তদন্ত করার জন্য প্রেরণ করেছেন।
মামলার বিষয়টি সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টের আইনজীবী মাসুদ পারভেজ রাসেল।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, সাবেক কাউন্সিলর ও দর্শনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দক্ষিণ চাঁদপুরের মৃত খোয়াজ মল্লিকের ছেলে জয়নাল আবেদীন নফর, সাবেক দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের ভাই ও সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী ও দর্শনা পুরাতন বাজারের মৃত ওহাব ওস্তাগারের ছেলে আলী মুনসুর বাবু (৫৫), দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুরের মৃত আইজাল মল্লিকের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা আলীহিম (৫৫), সাবেক দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবিব (৫৮), একই থানার কনস্টেবল সাজেদুল (৪০), দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই দেবাশীষ (৪০)সহ অজ্ঞাত ৫-৬ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনকে দলীয় দাপট দেখিয়ে সাবেক চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরসহ আসামিরা পুলিশের ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিল্লাল চাঁদা দিতে রাজি না হলে দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ মিজানুর রহমান মিজানসহ আসামিরা বিল্লালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১৩ সালের ১১ আগস্ট রাত আড়াই টার দিকে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে বিল্লালকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর উজলপুর রাস্তার হরচরার মাঠে নিয়ে যান আসামিরা। এ সময় তারা বিল্লালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও একাধিক গুলি করে হত্যা করেন। পরের দিন এই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
বাদী জানান, এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা শুনে আসামিরা বিল্লালের পরিবারকে গুম ও খুনের হুমকি দেন। পরে দেশে স্বৈরশাসক পতনের পর ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এ মামলার চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টের আইনজীবী মাসুদ পারভেজ রাসেল জানান, বিজ্ঞ আদালতের বিচারক বাদীর স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সিআইডিতে প্রেরণ করেছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাতে কোন কাগজপত্র আদালত থেকে এখনো আসেনি। আদালতের আদেশ এলে তদন্ত কাজ শুরু করা হবে।