
পানি সংকটের প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানি সংকটে ভুগছেন নগরবাসী। পানি পাওয়া গেলেও সেই পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের দেখা মিলছে। সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী সিটিতে পানির চাহিদা ১৮ কোটি লিটার তবে সরবরাহ সক্ষমতা শুধু ১১ কোটি লিটার।
ঢাকা ওয়াসার নারায়ণগঞ্জ জোনের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করার কারণে প্রতিদিন ৪-৫টি পাম্প নষ্ট হচ্ছে যার ফলে সংকট থেকেই যাচ্ছে।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর মেয়র, কাউন্সিলর বাদ দেওয়ায় তদারকির অভাবে পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা।
নারায়ণগঞ্জের নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, পাম্প কম এবং পুরনো লাইন এসব ৫ আগস্টের আগেও ছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে তখনও পানির এতো তীব্র সংকট দেখা দেয়নি। কারণ এখন সিটি কর্পোরেশনের কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর তদারকিতে নেই। প্রশাসন আসে মাত্র ২ দিন, যার ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বরত প্রশাসন এস এম কামরুজ্জামান বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রতিদিন না এলে তদারকির অভাব হয়। এটি বিবেচনা করে সরকার প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনে নিয়মিত প্রশাসন নিয়োগে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বন্দর নগরীর ২১ ও ২২ নং ওয়ার্ডে ‘অবিচল রাজবাড়ী’ নামের সংগঠন বিগত ২ বছর যাবত পানির জন্যে আন্দোলন করে আসছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আতিক মানিক জানায়, আন্দোলনের কারণে কিছু জায়গায় পানি আসলেও শাহী মসজিদ, সালেহ নগর, এস এম রোড সহ আরো বিভিন্ন এলাকায় এখনও ওয়াসার পানি পৌঁছায়নি।
সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলীরা জানান, গোদনাইল পানি শোধনাগারের পাম্প ৫ নভেম্বর নষ্ট হয়ে বন্ধ ছিল। এ ছাড়া বাগ-ই জান্নাত মসজিদের সামনের পাম্প এখনও বিকল। নিতাইগঞ্জের নষ্ট পাম্প মেরামত করা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের তাঁতখানায় পাম্পে কাজ চলছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানতলিতে, ধনকুন্ডাতে সমস্যা ছিল, সেগুলো মেরামত করা হয়েছে। এসব কারণে নগরীর বিভিন্ন অংশে পানির সমস্যা তৈরি হয়েছে।
তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ১৮ কোটি লিটার পানির চাহিদা থাকলেও তাদের সক্ষমতা ১১ কোটি লিটার। ফলে সংকট থেকেই যায়। তারা ৫ কোটি টাকার পানি নগরবাসীকে প্রতি মাসে দিলেও নগরবাসী ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মতো পানির বিল দেন। ওয়াসার বিদ্যুৎ বিলই দিতে হয় দেড় কোটি টাকা। ফলে নগরবাসী যে টাকা দেন সে টাকা দিয়ে নতুন পাম্প কিনতে পারছেন না বলে জানান তারা।